করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য
[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]
সপ্তম অধ্যায়
করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে বা বায়ুবাহিত কোনো রোগ নয়, কোনো ভাইরাসও নয়, এই কথাটা পরিষ্কারভাবে বুঝার জন্য এই নিবন্ধে এই পর্যন্ত অনেক দিক থেকে আলোচনা করা হয়েছে। যদি কারো এখনো বিষয়টা বুঝে না আসে, তাহলে তাকে এই নিবন্ধ প্রথম থেকে আবার পড়তে হবে। বুঝে আসবে না কেন! অবশ্যই বুঝে আসবে। যদি এরপরও বুঝে না আসে, তাহলে তার উচিত তার ১০০ জন কাছের লোককে পড়তে দেয়া, দেখা যাবে, তারা ঠিকই বুঝবে। শুধু চার ধরনের লোকের এই কথা বুঝতে বা মেনে নিতে কষ্ট হতে পারে- (১) নতুন ধারণা মেনে নিতে সবসময় যাদের কষ্ট হয়, (২) সবাই যা বলে, তা বিশ্বাস করতে যারা অভ্যস্ত; নিজে বিষয়টা নিয়ে ভেবে দেখার সামর্থ নেই, (৩) বিজ্ঞানের যে কোনো ধারণা যারা চিন্তাভাবনা করা ছাড়াই বিশ্বাস করতে পছন্দ করেন এবং (৪) এই কথা বুঝে নিলে বা মেনে নিলে নিজে দোষী হয়ে যাবে, এমন কিছু লোক।
যে কোনো নিরপেক্ষ লোক, চীনের প্রতি যাদের কোনো বিদ্বেষ নেই, বাড়তি ভালোবাসাও নেই, তাদের এই কথা বুঝতে কোনো কষ্ট হবার কথা নয়। উপরের চার শ্রেণির লোকের সৌজন্যে আরো দু’টি তথ্য উল্লেখ করতে হচ্ছে।
'What is coronavirus, how did it start and how big could it get?' শিরোনামে যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফের ওয়েবসাইটে ৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে (By Sarah Newey and Anne Gulland) বলা হয়,
'Is the coronavirus airborne?
There is some debate about whether the disease is airborne – there is no evidence for it yet, but that could change. Airborne viruses linger for a longer period of time than those spread by droplets and can also be spread in air conditioning and ventilation systems.
The current advice is that the disease can only be spread between close contacts – defined as spending more than 15 minutes within two metres of an infected person.' [https://www.telegraph.co.uk/news/2020/04/07/what-coronavirus-where-covid-19-came-from/]
এখানে বলা হয়েছে, এটি বায়ুবাহিত হবার পক্ষে এখনও (৭ এপ্রিল তারিখ পর্যন্তও) কোনো প্রমাণ নেই! ১১ এপ্রিল ২০২০ তারিখে চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইটে 'New COVID-19 study shows science must come before politics' শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে (by Tom Fowdy) বলা হয়, 'The world is still learning about this virus and in turn making sharp judgements about it whilst experts still puzzle themselves to make sense of all the facts.' [https://news.cgtn.com/news/2020-04-11/New-COVID-19-study-shows-science-must-come-before-politics-PATmnK2yze/index.html]
এখানে বলা হয়েছে বিশ্ব এখনও (১১ এপ্রিল পর্যন্ত) এই ভাইরাস সম্পর্কে শিখছে। বিশ্ব এই ভাইরাস সম্পর্কে ভালোভাবে শেখা শেষ হবার আগেই এই ভাইরাস নিয়ে অসংখ্য ধারণা আমরা আমাদের মনে পাকাপোক্তভাবে গেঁথে নিয়েছি এবং সেই অনুযায়ী দেশে দেশে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি।
এই ধারণাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, রোগটি বায়ুবাহিত বা ছোঁয়াচে। শুধু এই রোগ নয়, 'বায়ুবাহিত কোনো রোগই নেই পৃথিবীতে', এই কথাটা উপরে যথাযথভাবে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। কারোই বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীতে যদি কোনো বায়ুবাহিত রোগ না থাকে, তাহলে করোনাভাইরাস কিভাবে উহান থেকে অন্যান্য দেশে, পৃথিবীর ২০০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে?
এই প্রশ্নের উত্তর এই নিবন্ধের কাছে না চেয়ে (১) যারা ছোঁয়াচে বা বায়ুবাহিত রোগের ধারণার জন্ম দিয়েছে; (২) যারা পৃথিবীতে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু নামক কল্পিত ভুতের ধারণা ছড়িয়েছে; (৩) যারা করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর একে 'ভাইরাস' বলে আখ্যায়িত করেছে এবং একে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে বলে জোরোশোরো প্রচার করেছে বা এখনো করছে, এই তিন শ্রেণির মানুষের নিকট চাওয়া উচিত।
এই তিন শ্রেণির মানুষের কারণেই, এদের 'বাস্তবতাবিবর্জিত এবং গভীরভাবে পর্যবেক্ষণহীন' অনুসিদ্ধান্তের কারণেই বিশ্বের মানুষ নানারকম বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত এবং রোগটির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারছে না; এই তিন শ্রেণির মানুষের কারণেই করোনাভাইরাসকে সবাই ছোঁয়াচে/সংক্রামক রোগ ধরে নিয়ে বিভিন্ন ঘটনা বিচার করেছে; চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর চীনসহ পুরো পৃথিবী মানুষের জন্য এক ভয়াবহ গ্রহে অথবা নরকে পরিণত হয়েছে।
এই তিন শ্রেণির মানুষের কারণেই করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর আপাতদৃষ্টিতে যেসব ঘটনা দেখে 'করোনাভাইরাসকে একটি ছোঁয়াচে/সংক্রামক রোগ' মনে হয়েছে, সেসব ঘটনাকে আরো জঘণ্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর যেসব ঘটনায় করোনাভাইরাসকে ছোঁয়াচে/সংক্রামক রোগ মনে হয়নি, সেসব ঘটনাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে; অথবা হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, এমনকি সেসব ঘটনা প্রকাশও করা হয়েছে খুব কম।
এই তিন শ্রেণির মানুষও এই নিবন্ধ শুরু থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লে নিজেদের ধারণা ছুঁড়ে ফেলে নতুন ধারণা গ্রহণ করতে দ্বিধা করবে না। এরা করোনাভাইরাসকে ছোঁয়াচে বলে মন্তব্য করেছে সহজেই, কিন্তু যখন প্রমাণিত হলো করোনাভাইরাস কোনো ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ নয়, তখন এদের কাছে যদি প্রশ্ন করা হয়, কিভাবে তাহলে অন্য দেশে রোগটি ছড়িয়েছে, এরা সঠিক উত্তর দিতে হিমশিম খাবে। এদের কারণেই এখন প্রমাণ করতে খুব কষ্ট হবে, ছোঁয়াচে রোগ না হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে তাহলে অন্য দেশগুলোতে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে? এই নিবন্ধের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে প্রশ্নটির উত্তর খুঁজে বের করতে, হয়তো সন্তোষজনক উত্তর দেয়া যাবে না। সেজন্য এই নিবন্ধ কিন্তু দায়ী হবে না, দায়ী হবে তারাই, যারা শুরু থেকে করোনাকে ছোঁয়াচে/সংক্রামক বলে পরিস্থিতি জটিল এবং ঘোলাটে করে ফেলেছে।