করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য
[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]
চীনের উহানে অবস্থিত উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো রাসায়নিক মারণাস্ত্রের বিষক্রিয়ার ফলেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এটা উহানের মাছের বাজার থেকেও সৃষ্ট নয়, ছোঁয়াচেও নয়; রাসায়নিক মারণাস্ত্রের বিষক্রিয়ার ফলেই সৃষ্ট। এই কথাটা বিশ্বাস করার জন্য এই লেখার শুরু থেকে এই পর্যন্ত সব কথা বলা হয়েছে। তবু কারো যদি এখনো তা বিশ্বাস করতে দ্বিধা থাকে, তাদের জন্য আর মাত্র দু'টো বিষয় উল্লেখ করা হবে।
(১) প্রথমে কিছু প্রতিবেদন দেখা যাক:
'Up to 10 percent of recovered coronavirus patients test positive again, report says' শিরোনামে ৩০ মার্চ ২০২০ তারিখে ফক্স নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে (By Jackie Salo | New York Post) বলা হয়, 'As many as 10% of recovered coronavirus patients in China tested positive again after being discharged from the hospital, according to a report.
Doctors on the front lines of the outbreak in Wuhan, China — where the virus emerged — reported that between 3 and 10% of cured patients became reinfected with the illness, though it's unclear whether they were contagious the second time, the South China Morning Post reported.
Tongji Hospital, which identified the first COVID-19 case, confirmed that five of 145 patients — a little over 3% — tested positive again in nucleic acid tests, according to state broadcaster CCTV.
''So far there is no evidence to suggest that they are infectious,'' said Wang Wei, the hospital’s president.
He said the five patients who tested positive again did not have any symptoms and none of their close contacts had been infected.
Wang added that surveillance of similar patients showed that 80 to 90% had no trace of the virus in their system one month after being discharged from the hospital, according to the report.
But, he said, these are just ''small samples'' and ''not enough to assure us of the validity of our initial findings.''
''We need a large-scale epidemiological study to guide our disease surveillance and prevention works,'' Wang said.
Meanwhile, other quarantine facilities in Wuhan have seen about 5 to 10% of their recovered patients test positive again. The findings were reported by the health news outlet Life Times, which is affiliated with state-run newspaper People's Daily.
The studies come as health officials around the world are testing the concept of taking plasma from someone who has been infected, processing it and injecting the antibodies into a sick person to stimulate their immune system.' [https://www.foxnews.com/health/up-to-10-percent-of-recovered-coronavirus-patients-test-positive-again-report-says]
'মাত্র ২৪ ঘণ্টাতেই আক্রান্ত ৯৯, ফের করোনা-আতঙ্কে কাঁপছে চিন' শিরোনামে ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় ১২ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'চিনে ফের নতুন করে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক! চিনের মূল ভূখন্ডে এক দিনেই প্রায় একশো জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার সে দেশে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মোট ৯৯ জনের দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। সংখ্যার নিরিখে যা শুক্রবারের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি। চিনের সরকারি মাধ্যমে টুইট করে জানানো হয়েছে, এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে এটি একটি রেকর্ড।
চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এএইচসি) জানিয়েছে, গত ৬ মার্চের পরে এই প্রথম চিনে এক দিনে এত জন করোনায় সংক্রমিত হলেন। চিনে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৯৬ জন। বিশ্বের করোনা-আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকা, স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স এবং জার্মানির পরেই ছ’নম্বরে রয়েছে শি চিনফিংয়ের দেশ। ওই দেশের হুবেই প্রদেশের উহান থেকেই প্রথম এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে মনে করেন অনেকে। ইতিমধ্যেই হুবেই প্রদেশে সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২১৯ জনের।
এক দিকে, নতুন করে এই রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণের ফলে যেমন চিন্তিত চিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক, অন্য দিকে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের বাহ্যিক উপসর্গ নেই, অথচ সংক্রমণ ঘটেছে, এমন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির হারও। গত কাল চিনে এ ধরনের ৬৩টি কেস সামনে এসেছে। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুক্রবার ওই সংখ্যাটা ছিল ৩৪। পাশাপাশি, যে ৯৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র দু'জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা বিদেশফেরত।
ওই ৯৯ জন সংক্রমিতের মধ্যে বেশির ভাগই ছড়িয়ে রয়েছেন চিনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইতে। সেখানকার মিউনিসিপ্যাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, গত কাল সাংহাইতে ৫২ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ওই ৫২ জনের প্রত্যেকেই বিদেশফেরত। এর মধ্যে ৫১ জনই শুক্রবার একই উড়ানে রাশিয়া থেকে সাংহাইতে ফিরেছিলেন। অন্য এক জন কানাডা থেকে ফিরেছিলেন। সাংহাইয়ের মতো চিনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। হেইলংজিয়াং প্রদেশে যে ২১ জন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁরাও সকলে রাশিয়া থেকে দেশে ফিরেছিলেন বলে জানিয়েছে চিন।
বিদেশফেরতদের মাধ্যমে করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। রাশিয়ার দিকে সুইফেনহে সীমান্ত আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হেইলংজিয়াং প্রশাসন।' [https://www.anandabazar.com/international/coronavirus-99-new-coronavirus-cases-within-24-hours-in-china-dgtl-1.1135233]
'ভয়ংকর তথ্য! সুস্থ হয়েও আবারও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে চীনে' শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২৭ মার্চ, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'চীনের উহান থেকে বিশ্বের অন্তত ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে আঘাত হানে করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫,৪১০ জন। এছাড়াও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫,৬৫,০৪৪ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১,২৯,৩০৯ জন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের করাল গ্রাস থেকে অনেকটাই নাকি নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছে চীন। এই আশার বাণীর মধ্যেই নতুন করে শোনা গেল এক ভয়াবহ তথ্য। চীনে সুস্থ হয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্তদের ১০ শতাংশের শরীরে ফের মিলেছে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী চীনের সুস্থ হয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্তদের মধ্যে তিন থেকে দশ শতাংশের দেহরসের পরীক্ষায় ফের করোনাভাইরাস পজিটিভ মিলেছে। তবে নতুন করে করোনা আক্রান্তরা একইরকম ছোঁয়াচে কিনা, তা এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। তবে সেরে যাওয়ার পরেও নতুন করে করোনায় সংক্রামিত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে চীনজুড়ে।
চীনের উহানেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। নতুন করে আক্রান্তদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
উহানের তোংজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ১৪৫ জনের মধ্যে পাঁচ জনের শরীরে দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে।' সূত্র: এইসময়। [https://www.bd-pratidin.com/coronavirus/2020/03/27/514807]
'চরিত্র বদলাচ্ছে করোনা, চীনে সুস্থ হওয়া ৩ থেকে ১০ শতাংশ ফের আক্রান্ত!' শিরোনামে কালের কণ্ঠে ২৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। একের পর এক দেশে মহামারির মতো অবস্থা। ভয়াল হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। যদিও যে শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র বলছে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে চীনের। চীনে করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের তিন থেকে ১০ শতাংশ ফের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছে। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর পরীক্ষা করে তাদের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। আর তা এখন যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনের উহান শহর ছিল করোনা ভাইরাসের মূল কেন্দ্রবিন্দু। শহরটির টোংজি হাসপাতালের চিকিৎসকরা খুব কাছ থেকে দেখেছেন করোনা জীবাণুর চরিত্র বদল। টোংজি হাসপাতাল জানিয়েছে, নিউক্লিয়ার অ্যাসিড টেস্টে দেখা যাচ্ছে, ১৪৭ জন রোগীর মধ্যে পাঁচজন; অর্থাৎ তিন থেকে পাঁচ শতাংশ সেরে ওঠা রোগী ফের করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও তাদের শরীরে কোনো উপসর্গ ছিল না, তাদের সংস্পর্শে থাকা কারো শরীরে এই রোগ ছড়ায়নি এখনো পর্যন্ত। তাও সবাইকে সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে।
চীনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। সংক্রমিত ৯০ শতাংশের বেশি রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চার হাজার তিনশর মতো রোগীর এখনো চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এই পরিস্থতিতে নতুন করে সংক্রমণ ভাবাচ্ছে দেশাটর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
তবে এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চলছে। গবেষকরা খতিয়ে দেখছেন যে, করোনা রোগীরা সেরে ওঠার পর ফের তাদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। টোংজি হাসপাতালের চিকিৎসকরাই প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ চিহ্নিত করেন। অন্য দেশের তুলনায় চীনে রোগীরা অনেক বেশি সংখ্যায় সেরে ওঠায় তাদের গবেষণা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
হাসপাতালটির প্রেসিডেন্ট ওয়াং বলেছেন, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার এক মাস পর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীর শরীরে করোনা সংক্রমণ মেলেনি। যদিও তার মতে, খুব অল্প কয়েকজনের মধ্যে পরীক্ষা চলেছে, তাই তাদের অনুসন্ধান চূড়ান্ত কি-না তা বোঝার সময় এখনো হয়ে ওঠেনি। ইউহানের অন্যান্য হাসপাতাল জানিয়েছে, তাদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ রোগী সেরে ওঠার পরেও ফের করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।'
সূত্র : কলকাতা টোয়েন্টিফোর। [https://www.kalerkantho.com/online/world/2020/03/28/891828]
এই চারটি প্রতিবেদন মতে চীনে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ একেবারে শূণ্যের ঘরে নেমে আসার পর নতুন করে মানুষ আবার করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করে। উহানে এমন সব লোক নতুন করে আক্রান্ত হতে শুরু করে, যারা উহানেরই বাসিন্দা। অন্যদিকে উহান ছাড়া অন্য শহরে যাদের করোনা শনাক্ত হয়, তাদের প্রায় সবাই বিদেশফেরত। দ্বিতীয় প্রতিবেদন দেখলেই বুঝা যাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তাদের সংস্পর্শে থাকা কারো শরীরে এই রোগ ছড়ায়নি এখনো পর্যন্ত। এটাও বলা হয়, এখনো পর্যন্ত সেগুলোকে সংক্রামক বলে প্রমাণ করার মতো কোনো প্রমাণ নেই।
মূলকথা হলো, চীনের উহান ছাড়া অন্য যেসব শহরে পরে করোনা রোগী পাওয়া গেছে, সেসব শহরে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়ায়নি, বরং ছড়িয়েছে বিদেশ থেকে সংক্রমিত হয়ে করোনা নিয়ে ফেরা করোনা রোগী। আর উহানে উহানের বাসিন্দরাই নতুন করে করেনায় আক্রান্ত হয়েছে। এসবের কারণ কী?
কারণ হচ্ছে উহানের বাতাসে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক মারণাস্ত্রের অস্তিত্ব পুরোপুরি মিলিয়ে না যাওয়ার কারণেই নতুন করে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, সি ফুড মার্কেটের সাথে সম্পর্ক ছাড়াই। আর উহান ছাড়া অন্য শহরের বাতাসে যেহেতু আগেও রাসায়নিক মারণাস্ত্র মেশেনি, তাই সেসব শহরের অধিবাসীরা করোনায় আক্রান্তু হয়নি, সেসব শহরে শুধু বিদেশ থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগী ফিরে এসেছে, রোগ ফিরেনি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, উহানে করোনায় সংক্রমণ শূন্যের ঘরে নিয়ে আসার পর উহানের যারা নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন, তারা কার কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন? যদি কারো কাছ থেকে সংক্রমিত না হয়ে থাকেন, তাহলে করোনাভাইরাস সংক্রামক বা ভাইরাস হয় কী করে? কখনোই হতে পারে না।
এই প্রশ্নের চেয়েও বড় প্রশ্ন, যদি সংক্রামক না হয়, তাহলে তারা কোত্থেকে করোনায় আক্রান্ত হলো?
এই বিষয়গুলো নিয়ে যতোই ভাবা হবে, ততোই জট খুলবে রহস্যের।
তারা করোনায় আক্রান্ত হলো, কারণ উহানের বাতাস থেকে তখনও ওই ক্যামিকেল পুরোপুরি দূর হয়নি, যে ক্যামিকেল উহানে স্থাপিত বায়োলজিক্যাল ল্যাব থেকে গত বছরের শেষদিকে উহানের বাতাশে মিশে যাবার ফলে উহানের মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে শুরু করে।
নিরপেক্ষ মন নিয়ে এই নিবন্ধ শুরু থেকে এই পর্যন্ত যারা পড়েছে, তারা আর কোনোভাবেই ভাবতে পারবেন না, করোনাভাইরাস একটি ভাইরাস, যা ছোঁয়াচে হবার কারণে এক জন থেকে আরেকজনে ছড়ায়; করোনাভাইরাস চীনের উহানের সি ফুড মার্কেট থেকে ছড়ায়নি, কোনো প্রাণী থেকে ছড়ায়নি; বরং উহানের ল্যাবরেটরি থেকেই ছড়িয়েছে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে। এটা কিন্তু কোনো অভিযোগ নয়, অনেকটা প্রমাণিত সত্য।
যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে বলে আসছে চীনের ল্যাব থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। ১ মে ২০২০ তারিখে জার্মানির ডয়চে ভেলের (বাংলা) ওয়েবসাইটে রয়টার্স ও এপি'র সূত্রে 'উহানের পরীক্ষাগার থেকেই করোনা ছড়িয়েছে: ট্রাম্প' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'ফের চীনকে আক্রমণ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক সম্মেলনে ফের ট্রাম্প দাবি করলেন, উহানের পরীক্ষাগার থেকেই করোনা ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর কাছে প্রমাণ আছে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও এক হাত নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, সংস্থাটি চীনের মুখপত্র হিসেবে কাজ করছে।
প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণের জন্য চীনকে কাঠগড়ায় তোলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে একাধিকবার তিনি বলেছেন, চীন চাইলে করোনার সংক্রমণ রোধ করতে পারতো। উহানের ভাইরোলজির ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়েছে বলেও আগে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, অ্যামেরিকা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, তাঁর হাতে প্রমাণ আছে। কিন্তু ঠিক কী প্রমাণ আছে, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সময় মতো সব প্রকাশ পাবে।
একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও এ দিন ফের আক্রমণ করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, সংস্থাটি চীনের মুখপত্র হয়ে কাজ করছে। চীন তাদের যা বলতে বলছে, সংস্থাটিও ঠিক তা-ই বলছে। এ বিষয়েও অ্যামেরিকা তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকে মুখপাত্র গেং শুয়াং বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, 'কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা বিজ্ঞানের এক জটিল বিষয়। বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে কাজ করছেন, আলোচনা করছেন। বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরাই এ বিষয়ে মন্তব্য করলে ভালো।' ট্রাম্পকে তাঁর পরামর্শ, 'আপনি নিজের দেশে সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা করুন।' বস্তুত উহানের যে ভাইরোলজির পরীক্ষাগার নিয়ে এত প্রশ্ন, তারাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ভাবেই তাদের ল্যাবরেটরি থেকে করোনার সংক্রমণ হয়নি। যদিও শুধু ট্রাম্প নন, বিশেষজ্ঞদের একাংশ বার বার ওই পরীক্ষাগারের দিকেই আঙুল তুলছেন। প্রশ্ন উঠছে, এমনটা যে হতে পারে চীন কি তা আগেই জানতো? নইলে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কী করে দ্রুত চীন তার চরিত্র বুঝে গেল এবং লকডাউন ঘোষণা করে দিল? চক্রান্ত মূলক এমন বেশ কিছু তত্ত্ব হাওয়ায় ঘুরছে। ...' [https://www.dw.com/bn/a-53300517]
(২) আবার আসি ষড়যন্ত্র তত্ত্বে। উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর চীন ছাড়াও অনেক দেশকে দোষারোপ করা হয়। চীনের উহানে যদি ল্যাবটি না থাকতো; করোনাভাইরাসের উপদ্রব ঐ ল্যাব থেকে হয়নি, এই ব্যাপারে যদি চীন নিশ্চিত থাকতো, তাহলে চীন কি করোনাভাইরাসের উপদ্রব এবং আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে লুকোচুরি করতো? অন্য দেশের প্রতি সন্দেহের কথা চীন কি শুরু থেকেই বলে বেড়াতো না? চীন কি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই বিষয়ে তদন্ত করতে পরামর্শ বা চাপ দিতো না?
এখনো, করোনাভাইরাসের উপদ্রব চীন থেকে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাবার পরও চীন জোরগলায় অন্য দেশকে দোষারোপ করছে না কেন? এখনো আমেরিকা যখন চীনকে দোষারোপ করছে, চীন কেন বলছে, 'কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা বিজ্ঞানের এক জটিল বিষয়। বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে কাজ করছেন, আলোচনা করছেন। বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরাই এ বিষয়ে মন্তব্য করলে ভালো।' অন্য কোনো দেশকে দোষারোপ না করে বিজ্ঞানের উপর ছেড়ে দিচ্ছে কেন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর চীন কী দেবে, জানি না। তবে বিশ্ববাসীর কাছে এই খবর আছে, ‘দুর্ঘটনার পরপরই গোপনে কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং কিশান। [দৈনিক যুগান্তরে ২৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে 'রাসায়নিক অস্ত্রের কারখানা থেকেই ছড়িয়েছে ভাইরাস?' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ আছে। পুরো প্রতিবেদন উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।] এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের সাথে এই তথ্যের নিবিড় সম্পর্ক আছে।
'মাত্র ২৪ ঘণ্টাতেই আক্রান্ত ৯৯, ফের করোনা-আতঙ্কে কাঁপছে চিন' শিরোনামে ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় ১২ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'চিনে ফের নতুন করে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক! চিনের মূল ভূখন্ডে এক দিনেই প্রায় একশো জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার সে দেশে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মোট ৯৯ জনের দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। সংখ্যার নিরিখে যা শুক্রবারের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি। চিনের সরকারি মাধ্যমে টুইট করে জানানো হয়েছে, এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে এটি একটি রেকর্ড।
চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এএইচসি) জানিয়েছে, গত ৬ মার্চের পরে এই প্রথম চিনে এক দিনে এত জন করোনায় সংক্রমিত হলেন। চিনে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৯৬ জন। বিশ্বের করোনা-আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকা, স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স এবং জার্মানির পরেই ছ’নম্বরে রয়েছে শি চিনফিংয়ের দেশ। ওই দেশের হুবেই প্রদেশের উহান থেকেই প্রথম এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে মনে করেন অনেকে। ইতিমধ্যেই হুবেই প্রদেশে সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২১৯ জনের।
এক দিকে, নতুন করে এই রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণের ফলে যেমন চিন্তিত চিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক, অন্য দিকে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের বাহ্যিক উপসর্গ নেই, অথচ সংক্রমণ ঘটেছে, এমন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির হারও। গত কাল চিনে এ ধরনের ৬৩টি কেস সামনে এসেছে। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুক্রবার ওই সংখ্যাটা ছিল ৩৪। পাশাপাশি, যে ৯৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র দু'জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা বিদেশফেরত।
ওই ৯৯ জন সংক্রমিতের মধ্যে বেশির ভাগই ছড়িয়ে রয়েছেন চিনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইতে। সেখানকার মিউনিসিপ্যাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, গত কাল সাংহাইতে ৫২ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ওই ৫২ জনের প্রত্যেকেই বিদেশফেরত। এর মধ্যে ৫১ জনই শুক্রবার একই উড়ানে রাশিয়া থেকে সাংহাইতে ফিরেছিলেন। অন্য এক জন কানাডা থেকে ফিরেছিলেন। সাংহাইয়ের মতো চিনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। হেইলংজিয়াং প্রদেশে যে ২১ জন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁরাও সকলে রাশিয়া থেকে দেশে ফিরেছিলেন বলে জানিয়েছে চিন।
বিদেশফেরতদের মাধ্যমে করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। রাশিয়ার দিকে সুইফেনহে সীমান্ত আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হেইলংজিয়াং প্রশাসন।' [https://www.anandabazar.com/international/coronavirus-99-new-coronavirus-cases-within-24-hours-in-china-dgtl-1.1135233]
'ভয়ংকর তথ্য! সুস্থ হয়েও আবারও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে চীনে' শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২৭ মার্চ, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'চীনের উহান থেকে বিশ্বের অন্তত ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে আঘাত হানে করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫,৪১০ জন। এছাড়াও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫,৬৫,০৪৪ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১,২৯,৩০৯ জন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের করাল গ্রাস থেকে অনেকটাই নাকি নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছে চীন। এই আশার বাণীর মধ্যেই নতুন করে শোনা গেল এক ভয়াবহ তথ্য। চীনে সুস্থ হয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্তদের ১০ শতাংশের শরীরে ফের মিলেছে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী চীনের সুস্থ হয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্তদের মধ্যে তিন থেকে দশ শতাংশের দেহরসের পরীক্ষায় ফের করোনাভাইরাস পজিটিভ মিলেছে। তবে নতুন করে করোনা আক্রান্তরা একইরকম ছোঁয়াচে কিনা, তা এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। তবে সেরে যাওয়ার পরেও নতুন করে করোনায় সংক্রামিত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে চীনজুড়ে।
চীনের উহানেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। নতুন করে আক্রান্তদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
উহানের তোংজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ১৪৫ জনের মধ্যে পাঁচ জনের শরীরে দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে।' সূত্র: এইসময়। [https://www.bd-pratidin.com/coronavirus/2020/03/27/514807]
'চরিত্র বদলাচ্ছে করোনা, চীনে সুস্থ হওয়া ৩ থেকে ১০ শতাংশ ফের আক্রান্ত!' শিরোনামে কালের কণ্ঠে ২৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। একের পর এক দেশে মহামারির মতো অবস্থা। ভয়াল হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। যদিও যে শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র বলছে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে চীনের। চীনে করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের তিন থেকে ১০ শতাংশ ফের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছে। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর পরীক্ষা করে তাদের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। আর তা এখন যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনের উহান শহর ছিল করোনা ভাইরাসের মূল কেন্দ্রবিন্দু। শহরটির টোংজি হাসপাতালের চিকিৎসকরা খুব কাছ থেকে দেখেছেন করোনা জীবাণুর চরিত্র বদল। টোংজি হাসপাতাল জানিয়েছে, নিউক্লিয়ার অ্যাসিড টেস্টে দেখা যাচ্ছে, ১৪৭ জন রোগীর মধ্যে পাঁচজন; অর্থাৎ তিন থেকে পাঁচ শতাংশ সেরে ওঠা রোগী ফের করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও তাদের শরীরে কোনো উপসর্গ ছিল না, তাদের সংস্পর্শে থাকা কারো শরীরে এই রোগ ছড়ায়নি এখনো পর্যন্ত। তাও সবাইকে সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে।
চীনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। সংক্রমিত ৯০ শতাংশের বেশি রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চার হাজার তিনশর মতো রোগীর এখনো চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এই পরিস্থতিতে নতুন করে সংক্রমণ ভাবাচ্ছে দেশাটর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
তবে এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চলছে। গবেষকরা খতিয়ে দেখছেন যে, করোনা রোগীরা সেরে ওঠার পর ফের তাদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। টোংজি হাসপাতালের চিকিৎসকরাই প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ চিহ্নিত করেন। অন্য দেশের তুলনায় চীনে রোগীরা অনেক বেশি সংখ্যায় সেরে ওঠায় তাদের গবেষণা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
হাসপাতালটির প্রেসিডেন্ট ওয়াং বলেছেন, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার এক মাস পর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীর শরীরে করোনা সংক্রমণ মেলেনি। যদিও তার মতে, খুব অল্প কয়েকজনের মধ্যে পরীক্ষা চলেছে, তাই তাদের অনুসন্ধান চূড়ান্ত কি-না তা বোঝার সময় এখনো হয়ে ওঠেনি। ইউহানের অন্যান্য হাসপাতাল জানিয়েছে, তাদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ রোগী সেরে ওঠার পরেও ফের করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।'
সূত্র : কলকাতা টোয়েন্টিফোর। [https://www.kalerkantho.com/online/world/2020/03/28/891828]
এই চারটি প্রতিবেদন মতে চীনে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ একেবারে শূণ্যের ঘরে নেমে আসার পর নতুন করে মানুষ আবার করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করে। উহানে এমন সব লোক নতুন করে আক্রান্ত হতে শুরু করে, যারা উহানেরই বাসিন্দা। অন্যদিকে উহান ছাড়া অন্য শহরে যাদের করোনা শনাক্ত হয়, তাদের প্রায় সবাই বিদেশফেরত। দ্বিতীয় প্রতিবেদন দেখলেই বুঝা যাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তাদের সংস্পর্শে থাকা কারো শরীরে এই রোগ ছড়ায়নি এখনো পর্যন্ত। এটাও বলা হয়, এখনো পর্যন্ত সেগুলোকে সংক্রামক বলে প্রমাণ করার মতো কোনো প্রমাণ নেই।
মূলকথা হলো, চীনের উহান ছাড়া অন্য যেসব শহরে পরে করোনা রোগী পাওয়া গেছে, সেসব শহরে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়ায়নি, বরং ছড়িয়েছে বিদেশ থেকে সংক্রমিত হয়ে করোনা নিয়ে ফেরা করোনা রোগী। আর উহানে উহানের বাসিন্দরাই নতুন করে করেনায় আক্রান্ত হয়েছে। এসবের কারণ কী?
কারণ হচ্ছে উহানের বাতাসে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক মারণাস্ত্রের অস্তিত্ব পুরোপুরি মিলিয়ে না যাওয়ার কারণেই নতুন করে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, সি ফুড মার্কেটের সাথে সম্পর্ক ছাড়াই। আর উহান ছাড়া অন্য শহরের বাতাসে যেহেতু আগেও রাসায়নিক মারণাস্ত্র মেশেনি, তাই সেসব শহরের অধিবাসীরা করোনায় আক্রান্তু হয়নি, সেসব শহরে শুধু বিদেশ থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগী ফিরে এসেছে, রোগ ফিরেনি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, উহানে করোনায় সংক্রমণ শূন্যের ঘরে নিয়ে আসার পর উহানের যারা নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন, তারা কার কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন? যদি কারো কাছ থেকে সংক্রমিত না হয়ে থাকেন, তাহলে করোনাভাইরাস সংক্রামক বা ভাইরাস হয় কী করে? কখনোই হতে পারে না।
এই প্রশ্নের চেয়েও বড় প্রশ্ন, যদি সংক্রামক না হয়, তাহলে তারা কোত্থেকে করোনায় আক্রান্ত হলো?
এই বিষয়গুলো নিয়ে যতোই ভাবা হবে, ততোই জট খুলবে রহস্যের।
তারা করোনায় আক্রান্ত হলো, কারণ উহানের বাতাস থেকে তখনও ওই ক্যামিকেল পুরোপুরি দূর হয়নি, যে ক্যামিকেল উহানে স্থাপিত বায়োলজিক্যাল ল্যাব থেকে গত বছরের শেষদিকে উহানের বাতাশে মিশে যাবার ফলে উহানের মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে শুরু করে।
নিরপেক্ষ মন নিয়ে এই নিবন্ধ শুরু থেকে এই পর্যন্ত যারা পড়েছে, তারা আর কোনোভাবেই ভাবতে পারবেন না, করোনাভাইরাস একটি ভাইরাস, যা ছোঁয়াচে হবার কারণে এক জন থেকে আরেকজনে ছড়ায়; করোনাভাইরাস চীনের উহানের সি ফুড মার্কেট থেকে ছড়ায়নি, কোনো প্রাণী থেকে ছড়ায়নি; বরং উহানের ল্যাবরেটরি থেকেই ছড়িয়েছে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে। এটা কিন্তু কোনো অভিযোগ নয়, অনেকটা প্রমাণিত সত্য।
যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে বলে আসছে চীনের ল্যাব থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। ১ মে ২০২০ তারিখে জার্মানির ডয়চে ভেলের (বাংলা) ওয়েবসাইটে রয়টার্স ও এপি'র সূত্রে 'উহানের পরীক্ষাগার থেকেই করোনা ছড়িয়েছে: ট্রাম্প' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'ফের চীনকে আক্রমণ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক সম্মেলনে ফের ট্রাম্প দাবি করলেন, উহানের পরীক্ষাগার থেকেই করোনা ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর কাছে প্রমাণ আছে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও এক হাত নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, সংস্থাটি চীনের মুখপত্র হিসেবে কাজ করছে।
প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণের জন্য চীনকে কাঠগড়ায় তোলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে একাধিকবার তিনি বলেছেন, চীন চাইলে করোনার সংক্রমণ রোধ করতে পারতো। উহানের ভাইরোলজির ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়েছে বলেও আগে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, অ্যামেরিকা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, তাঁর হাতে প্রমাণ আছে। কিন্তু ঠিক কী প্রমাণ আছে, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সময় মতো সব প্রকাশ পাবে।
একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও এ দিন ফের আক্রমণ করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, সংস্থাটি চীনের মুখপত্র হয়ে কাজ করছে। চীন তাদের যা বলতে বলছে, সংস্থাটিও ঠিক তা-ই বলছে। এ বিষয়েও অ্যামেরিকা তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকে মুখপাত্র গেং শুয়াং বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, 'কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা বিজ্ঞানের এক জটিল বিষয়। বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে কাজ করছেন, আলোচনা করছেন। বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরাই এ বিষয়ে মন্তব্য করলে ভালো।' ট্রাম্পকে তাঁর পরামর্শ, 'আপনি নিজের দেশে সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা করুন।' বস্তুত উহানের যে ভাইরোলজির পরীক্ষাগার নিয়ে এত প্রশ্ন, তারাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ভাবেই তাদের ল্যাবরেটরি থেকে করোনার সংক্রমণ হয়নি। যদিও শুধু ট্রাম্প নন, বিশেষজ্ঞদের একাংশ বার বার ওই পরীক্ষাগারের দিকেই আঙুল তুলছেন। প্রশ্ন উঠছে, এমনটা যে হতে পারে চীন কি তা আগেই জানতো? নইলে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কী করে দ্রুত চীন তার চরিত্র বুঝে গেল এবং লকডাউন ঘোষণা করে দিল? চক্রান্ত মূলক এমন বেশ কিছু তত্ত্ব হাওয়ায় ঘুরছে। ...' [https://www.dw.com/bn/a-53300517]
(২) আবার আসি ষড়যন্ত্র তত্ত্বে। উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর চীন ছাড়াও অনেক দেশকে দোষারোপ করা হয়। চীনের উহানে যদি ল্যাবটি না থাকতো; করোনাভাইরাসের উপদ্রব ঐ ল্যাব থেকে হয়নি, এই ব্যাপারে যদি চীন নিশ্চিত থাকতো, তাহলে চীন কি করোনাভাইরাসের উপদ্রব এবং আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে লুকোচুরি করতো? অন্য দেশের প্রতি সন্দেহের কথা চীন কি শুরু থেকেই বলে বেড়াতো না? চীন কি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই বিষয়ে তদন্ত করতে পরামর্শ বা চাপ দিতো না?
এখনো, করোনাভাইরাসের উপদ্রব চীন থেকে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাবার পরও চীন জোরগলায় অন্য দেশকে দোষারোপ করছে না কেন? এখনো আমেরিকা যখন চীনকে দোষারোপ করছে, চীন কেন বলছে, 'কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা বিজ্ঞানের এক জটিল বিষয়। বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে কাজ করছেন, আলোচনা করছেন। বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরাই এ বিষয়ে মন্তব্য করলে ভালো।' অন্য কোনো দেশকে দোষারোপ না করে বিজ্ঞানের উপর ছেড়ে দিচ্ছে কেন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর চীন কী দেবে, জানি না। তবে বিশ্ববাসীর কাছে এই খবর আছে, ‘দুর্ঘটনার পরপরই গোপনে কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং কিশান। [দৈনিক যুগান্তরে ২৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে 'রাসায়নিক অস্ত্রের কারখানা থেকেই ছড়িয়েছে ভাইরাস?' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ আছে। পুরো প্রতিবেদন উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।] এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের সাথে এই তথ্যের নিবিড় সম্পর্ক আছে।