করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য
[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]
ষষ্ঠ অধ্যায়
কমপক্ষে এটা দাঁড়ায়, উহানের এই ভাইরাস কোনো ভাইরাস নয়। কিভাবে এই ফলাফল দাঁড়ায়, তা আমরা সংক্ষেপে আবার জেনে নিই।
(এক) করোনাভাইরাসকে 'অজ্ঞাত কারণে নিউমোনিয়া' বলেও আখ্যায়িত করা হয়। মূলত করোনায় আক্রান্ত মানুষ ফুসফুসের মারাত্মক সংক্রমণে ভোগে। আর ফুসফুসে সংক্রমণকেই নিউমোনিয়া বলে অভিহিত করা হয়। আর নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা এইরকম যেসব শারীরিক সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হাঁচি-কাশি, সেসব রোগ একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়াতে পারে না তথা সেসব রোগ ছোঁয়াচে/সংক্রামক নয় বলে আমরা প্রথমেই নিশ্চিত হয়ে নিলাম।
'Is Pneumonia Contagious?' শিরোনামে ফাস্টমেড শিরোনামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়,
'Pneumonia Is Not Contagious, But Viruses And Bacteria Are
The most simple answer to the question ''is pneumonia infectious?'' is no. Pneumonia, in itself, is not contagious, but the germs that cause it often are. Germs and viruses that cause the flu, common cold, or bacterial infections are contagious and can lead to pneumonia.
Who is most likely to get pneumonia?
- People with weakened immune system due to medications
- People with pre-existing medical conditions
- Children under the age of 2
- Adults over the age of 65'
[https://www.fastmed.com/health-resources/is-pneumonia-contagious/]
(দুই) 'নিউমোনিয়া একটি ছোঁয়াচে/সংক্রামক রোগ' কথাটিকে এই দু'টি নিবন্ধে সরাসরি নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তবে বলা হয়েছে, নিউমোনিয়া ছোঁয়াচে/সংক্রামক না হলেও নিউমোনিয়া সৃষ্টি করতে পারে, এমন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলো সংক্রামক।
ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক হবার ধারণা প্রচলিত থাকার কারণেই নিবন্ধগুলোতে এমন মন্তব্য জুড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এই নিবন্ধে ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি শুধু ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস নয়, জীবাণুও একজন মানুষের শরীর থেকে কোনো রোগকে আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত করার ক্ষমতা রাখে না, সংক্রমিত করার পেছনে কোনো প্রভাব ফেলতে সক্ষম নয়। সুতরাং নিউমোনিয়া সৃষ্টি করতে পারে, এমন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোও সংক্রামক নয়।
নিউমোকোকাস জীবাণুকে ব্যাক্টেরিয়াল নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী করার কথা অনেকে বলে থাকেন। কিন্তু দ্বিতীয় নিবন্ধে এ সম্পর্কে বলা হয়, 'রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলোর মতে, ডাক্তাররাও সর্বদা নিশ্চিত হতে পারেন না, নিউমোনিয়ায় সংক্রমণটি কোথা থেকে আসে।'
নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণ সম্পর্কে এই নিবন্ধের শুরুতেই আলোচনা করা হয়েছে। এই রোগ দু'টির সাথে বেশি ঠান্ডা লাগা এবং ঠান্ডা-গরমের আকস্মিক মিশ্রণের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা এড়ানো এবং গরম পরিবেশ থেকে এসে বিশ্রাম নেয়ার আগে শরীরে ঠান্ডা লাগানো বা পানি পান করা এড়ানোর সাথে রোগ দু'টি প্রতিরোধ করাটা নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। রোগ দু'টোকে জীবাণু/ব্যাকটেরিয়া/ভাইরাস নামক ভুতের সাথে সম্পর্কিত করার কোনো অর্থ নেই।
অনেকগুলো নিরীক্ষার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যে নিরীক্ষাগুলো সুস্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেবে, রোগ দু'টো নিজেই যেমন সংক্রামক নয়, রোগ দু'টোর 'কল্পিত স্রষ্টা' ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোও সংক্রামক নয়।
নিউমোনিয়া নিজে যদি সংক্রামক না হয়, নিউমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোও যদি সংক্রামক না হয়, তাহলে করোনাভাইরাস কিভাবে সংক্রামক হবে?
(তিন) চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদে যে প্রতিবেদনগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সেই প্রতিবেদনগুলো সম্মিলিতভাবে খুব শক্তভাবে প্রমাণ করে, চীনের বাইরে প্রথম প্রথম যেসব দেশের মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তারা প্রায় সবাই 'উহান ফেরত'। তার মানে উহান থেকে রোগটির উৎপত্তি হবার পর যারা উহানে গমন করেনি বা উহানে ছিল না, তারা এতে আক্রান্ত হয়নি; শুধু চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে তারাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যারা উহানে ছিল বা গমন করেছে। এতে এটাই প্রমাণিত হয়, রোগটি একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয়নি। বরং সংক্রমিত হয়েছে উহান থেকে।
এজন্য উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে যারা উহান থেকে বিভিন্ন দেশে ফেরত গেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে তাদের করোনাভাইরাস নতুন কাউকে তেমন একটা আক্রান্ত করেনি। তারা ফেরত যাবার অনেক পর তারা যেসব দেশে ফেরত গিয়েছে, সেসব দেশে করোনাভাইরাসের উপদ্রব গুরুতর হতে শুরু করেছে। এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে উহান থেকে করোনাভাইরাসের রোগী গমন করার পরও, এমনকি করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণের পরও সেসব দেশে করোনাভাইরাস তেমন মারাত্মক আকার ধারণ করেনি, কোনো কোনো দেশে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে অনেক পর। চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদে উল্লেখিত প্রতিবেদনগুলোর সূত্র ধরেই এই দাবির সত্যতা যাচাই করা যাবে। এ সম্পর্কে পরে আরো আলোচনা করা হবে।
(চার) উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর শুধু উহান শহর বা হুবেই প্রদেশ নয়, পুরো চীনজুড়ে মাস্ক ব্যবহারের হিড়িক পড়ে যায়। চীনের পর অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাস হানা দেয়ার পর সেসব দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চিকিৎসাকর্মীরাও মাস্ক পরতে শুরু করে। কিন্তু কী লাভ হয়েছে? করোনাভাইরাস যদি সত্যিই কোনো 'ভাইরাস' হতো, তাহলে মাস্ক পরিহিত কেউ এতে আক্রান্ত হতো না। যেখানে শুধু মাস্ক পরিহিত সাধারণ মানুষকেই নয়, চীন, ইতালী, যুক্তরাষ্ট্রসহ করোনাভাইরাসের কবলে পড়া প্রায় সব দেশে মাস্কসহ আপাদমস্তক মোড়ানো অসংখ্য চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীকেও রোগটি আক্রমণ করে বসেছে, সেখানে রোগটিকে 'ভাইরাস' বলার কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে? মাস্ক এবং পিপিই পরেও এই 'ভাইরাসে'র আক্রমণ থেকে মানুষ যখন রক্ষা পায়নি, তখন একে ভাইরাস বলার মধ্যে কী মজা থাকতে পারে!
অবশ্য চীনসহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের আক্রমণ শুরু হবার পর যখন দেখা গেলো মাস্ক পরেও করোনাভাইরাসের আক্রমণ প্রতিহত করা যাচ্ছে না, তখন এরকম অনেক গবেষণা-ফলাফল প্রকাশিত হতে শুরু করলো, মাস্ক পরেও লাভ নেই! এ সম্পর্কিত অনেকগুলো নিবন্ধ/প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি মাস্ক সম্পর্কিত আলোচনায় ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়। এখানে শুধু একটি উদ্ধৃতি পুণরোল্লেখ করা হচ্ছে।
সিএনবিসি'র ওয়েবসাইটে 'Do face masks work? Medical experts explain how to protect yourself from coronavirus' শিরোনামে ২ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে (By Sam Meredith) বলা হয়, 'Medical experts have urged people to stop panic buying face masks, warning that such equipment is not an effective way to protect yourself from the fast-spreading coronavirus.'
[https://www.cnbc.com/2020/03/02/coronavirus-do-face-masks-work-and-how-to-stop-it-from-spreading.html?recirc=taboolainternal]
জীবাণু বা ভাইরাসসৃষ্ট সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের ইতিহাসে, বিশেষত বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের ইতিহাসে ইতোপূর্বে কখনো মাস্কের অকার্যকারিতার কথাটা হয়তো এভাবে আর সবার সামনে পরিষ্কার হয়নি। কারণ? কারণ করোনাভাইরাস আসলেই কোনো ভাইরাস বা বায়ুবাহিত রোগ নয়, বরং অন্যকিছু। অন্তত এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষার ক্ষেত্রে মাস্কের অকার্যকারীতার কথা বিবেচনা করেও 'ভাইরাস' হিসেবে প্রচারিত এই ভাইরাসকে 'ভাইরাস নয়' বলে উপলব্ধি করাটা সবার নিকট পরিষ্কার হবার কথা।
(পাঁচ) চতুর্থ অধ্যায়ের চতুর্থ পরিচ্ছেদে যে ৩৮টি নিবন্ধ/প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোতে উল্লেখিত সবগুলো ঘটনার বিবরণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লে পরিষ্কার হবে, (১) চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে যেসব করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের অধিকাংশই চীনের উহান থেকেই ফিরেছিল। উহানে থাকতেই তারা রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে। উহান থেকে আক্রান্ত হয়ে অন্য দেশে গিয়ে মারা গেছে মাত্র। ইঁদুরের মতো। যেখানে ইঁদুরের উৎপাত বেশি, সেখানেই ইঁদুর মারার ঔষধ দেয়া হয়। কিন্তু ঔষধ খেয়ে সব ইঁদুর কি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়? কিছু ইঁদুর ঘটনাস্থলে প্রাণ না হারিয়ে অন্য জায়গায় গিয়েও প্রাণ হারায় কখনো কখনো। (২) চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর পৃথিবীর অনেক দেশে এমন অনেক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যেসব দেশে চীন থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী গমন করেছে, কিন্তু যারা আক্রান্ত হয়েছে, তারা এসব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কারো সাথে কোনো রকম সম্পর্ক ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। (৩) এমন অনেক দেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অনেক রোগী শনাক্ত হয়েছে, যেসব দেশে চীন-ফেরত কোনো করোনায় আক্রান্ত রোগী গমনই করেনি এবং স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত এসব লোকরাও বিগত কয়েক মাসের মধ্যে চীনের উহানে ছিল না বা যায়নি।
এই তিনটা বিষয় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে করোনাভাইরাসকে ভাইরাস মনে হবে না কোনোভাবে। মনে হবে, চীনের উহানে একটা 'অদৃশ্য তাপহীন আগুন' লাগার মতো কিছু হয়েছিলো, সেই আগুনে পুড়ে অনেকে উহানেই মারা গেছে, অনেকে অন্য দেশে গিয়ে মারা গেছে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, (১) যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী যায়নি, সেসব দেশের মানুষও কোত্থেকে উহানের সেই করোনার 'অদৃশ্য ও তাপহীন' আগুনে দগ্ধ হয়েছে? (২) অন্য অনেক দেশের এমন অনেক মানুষ কোত্থেকে উহানের সেই করোনার 'অদৃশ্য ও তাপহীন' আগুনে দগ্ধ হয়েছে, যারা চীনে বা উহানে গমন করেনি? (৩) উহান থেকে করোনায় আক্রান্ত মানুষ গমন করেছে, এমন অনেক দেশে এমন অনেক মানুষ কিভাবে উহানের সেই করোনার 'অদৃশ্য ও তাপহীন' আগুনে দগ্ধ হয়েছে, যারা উহান-ফেরতও নয়, এমনকি উহান-ফেরত করোনায় আক্রান্ত লোকদের ধারে কাছেও যায়নি?
এই তিনটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের পথ তখনই আলোকিত হবে, যখন- (১) মনে করা হবে করোনাভাইরাস কোনো 'ভাইরাস' নয় এবং (২) স্মরণ করা হবে পৃথিবীতে অল্প কিছু মানুষ কখনো কখনো অসংখ্য মানুষের ধ্বংসের পেছনে ভূমিকা রাখে। আণবিক বোমা সর্বপ্রথম যাদের জীবনে ধ্বংস ডেকে এনেছিল, তারা কেউ আণবিক বোমা তৈরিতে ভূমিকা রাখেনি, তাদের সংখ্যাটা আণবিক বোমা তৈরিতে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের সংখ্যার চেয়ে হাজার গুণ বেশি। অল্প কিছু 'ভিন্ন প্রকৃতির লোক' লক্ষ মানুষের জীবনে ধ্বংস ডেকে এনেছে।
যারা আণবিক বোমা তৈরি করেছিল এবং নিক্ষেপ করেছিল, তাদের মনে কোনো মহৎ উদ্দেশ্য কাজ করেছিল কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিশ্বব্যাপী জরিপ চালানো হলে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের রায় কী হতে পারে? অনেকে বলে ফেলতে পারেন, একজন মানুষও পাওয়া যাবে না, যে মনে করবে তাদের মনে সামান্য পরিমাণ মহৎ উদ্দেশ্যও ছিল। কিন্তু আমার মনে হয় এখনও এমন কিছু মানুষ পাওয়া যাবে, যারা আণবিক বোমা তৈরির পেছনে কোনো না কোনো মহৎ উদ্দেশ্য ছিল বলে মতামত দেবে। যদি তা না হতো, তাহলে এখনও কেন কিছু মানুষ আণবিক বোমা তৈরিতে এতো মরিয়া? এখনো কেন দেশে দেশে আণবিক বোমা তৈরির প্রতিযোগিতা? কী করবে ওরা বোমাগুলো দিয়ে? কোন্ মহৎ উদ্দেশ্যে আণবিক বোমা তৈরি ও মজুতকরণে এতো উৎসাহ; আণবিক বোমা তৈরির পেছনে এতো খরচ? এমন অনেক দেশও আছে, যেখানে অসংখ্য মানুষ ঠিকমতো দু'বেলা খেতেও পায় না, যেখানে অসংখ্য মানুষ বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, সেসব দেশেও পর্যাপ্ত আণবিক বোমা মজুত!