করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য (পর্ব-৩৮) : অনেক দেশে করোনা ছড়ায়নি, ছিল পরীক্ষা পদ্ধতির ভুল

14 minute read
0

 করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য

[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]



অনেক দেশে করোনা ছড়ায়নি, ছিল পরীক্ষা পদ্ধতির ভুল
কয়েকভাবে বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। (১) করোনা সংক্রমিত অধিকাংশ দেশে অসংখ্য করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে উহান থেকে ফেরা কোনো রোগীর সংস্পর্শে গিয়ে নয়, বরং প্রচলিত পরীক্ষার ত্রুটির কারণে। প্রচলিত আরটি পিসিআর পরীক্ষাটি মূলত করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য আবিষ্কৃত হয়নি। আবিষ্কৃত হয়েছে সাধারণ নিউমোনিয়াসহ নির্দিষ্ট কিছু রোগ নির্ণয়ের জন্য। করোনাভাইরাস লক্ষণ ও ক্ষতির দিক থেকে নিউমোনিয়ার একেবারে কাছাকাছি রোগ হবার কারণে করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর নিউমোনিয়ায় ব্যবহৃত পরীক্ষা পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কারণে সাধারণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেকেও করোনা পজিটিভ রোগী হয়ে গেছে অনেক অনেক দেশে। যেহেতু উভয়টা ফুসফুস সংক্রমণের রোগ। করোনাভাইরাস পরীক্ষা পদ্ধতি এবং পদ্ধতিগত ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এইজন্য যেসব দেশে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে, সেসব দেশে 'প্রকৃত করোনা'য় সংক্রমিত নয়, এমন অনেক মানুষও করোনা পজিটিভ হয়ে গেছে। এদের অনেকে তাই চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে গেছে। যেমন রাশিয়া। 'রাশিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কম কেন' শিরোনামে ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরীক্ষা, পরীক্ষা এবং পরীক্ষা। পরীক্ষাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের বড় উপায়। রাশিয়ার এই সংস্থার প্রধান মেলিটা ভুজোনভিক বলেছেন, রাশিয়া এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে জানুয়ারির শেষ দিক থেকেই। এর পাশাপাশি রাশিয়া সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়ায় এখন ১ লাখ ৫৬ হাজার কিট আছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য। রাশিয়া এত আগে ব্যবস্থা নিলেও যুক্তরাষ্ট্র মার্চের শুরু থেকে নড়েচড়ে বসেছে।' [https://www.prothomalo.com/international/article/1646294]

'রাশিয়ায় সংক্রমণ বৃদ্ধি, ঝুঁকিতে ইউরোপ' শিরোনামে প্রথম আলোয় ১৪ মে ২০২০ তারিখে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বর্তমানে যেসব দেশে একেবারে লাগামহীন, সেই সব দেশের অন্যতম রাশিয়া। দেশটিতে ৭ মে পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার। গতকাল বুধবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার। ফলে করোনার এখন অন্যতম কেন্দ্র এই রাশিয়া। ...
করোনা মহামারির সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো, দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিস্টেম সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ হাজার করে রোগী বাড়ছে রাশিয়ায়। তবে দেশটির আক্রান্তের তুলনায় মৃতের হার এখনো কম। এ পর্যন্ত মারা গেছেন দুই হাজার দুই শর বেশি মানুষ। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, দেশটিতে মৃত্যুর হার কম থাকার অন্যতম কারণ হলো, তারা ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলের দেশগুলোর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। তারা দ্রুত রোগী ও ঝুঁকিপূর্ণদের আইসোলেশনে নিচ্ছে। এ ছাড়া পরীক্ষার সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়িয়েছে দেশটি। ফলে মৃদু সংক্রমিত রোগীদের চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ...
প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে দেশটি। ...'
এটা ১৬ মে ২০২০ এর হিসাব।
জাপানে করোনাভাইরাস সম্পর্কে একটু আগে উল্লেখিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাপানে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং পজিটিভ ফলাফলের অনুপাতিক হার খুব কাছাকাছি। কিন্তু মৃত্যু কম। কারণ 'প্রকৃত করোনাভাইরাস' জাপানে আক্রমণ করেনি।
জাপানের ব্যাপকভাবে পরীক্ষা না করার বিষয়ে একটু আগে জাপান সম্পর্কে আলোচনায় বিবিসি'র যে  রেফারেন্স দেয়া হয়েছে, তার সঠিকত্ব নিয়ে যদি প্রশ্ন করা হয়, তাহলে এই প্রশ্নও সৃষ্টি হয়, জাপানে স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা কিভাবে ঘটলো? স্থানীয় সংক্রমণ ঘটেছে, এমন ১০ টি দেশ নিয়ে এর আগেও আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে জাপানের উদাহরণও উল্লেখ করা হয়েছে। 

জাপানে কম্যুনিটি ট্রান্সমিশনের আরেকটি উদাহরণ দেখা যাক:
'জাপানের করোনা মোকাবিলার সফল মডেল ‘টিটিটি' শিরোনামে ডেইলী স্টার বাংলায় ১৬ মে ২০২০ তারিখে একটি নিবন্ধ লিখেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী ড. আশির আহমেদ। সেখানে বলা হয়, 'আমাদের ফুকুওকা শহরে প্রথম যিনি করোনা আক্রান্ত হন, তার হিস্ট্রি থেকে জানা গেল, তিনি কখনো বিদেশে যাননি। এমনকি এরমধ্যে টোকিওতেও যাননি। চিন্তার বিষয়। তার করোনা এলো কোথা থেকে? নিশ্চয়ই আরও আক্রান্ত আছে অথবা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে। একজন মহামারি বিশেষজ্ঞ জানালেন, একজন শনাক্ত হওয়া মানে হলো, সে ইতোমধ্যে আরও ৫০ জনকে সংক্রমিত করতে করতে হাসপাতালে এসেছে। তাই টেস্ট সংখ্যা বাড়ানো উচিত। তবে, উপসর্গ দেখা গেলে তারপর টেস্ট।' [https://www.thedailystar.net/bangla/150730]

স্থানীয় সংক্রমণ ঘটেছে, এমন ১০ টি দেশ নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা ছাড়াও একটু আগে চীন ফেরত করোনা রোগী থেকে করোনা বিস্তার লাভ করেনি, এমন কয়েকটি দেশের উপর যে আলোচনা করা হয়েছে, সেই আলোচনা থেকেও এটা স্পষ্ট হতে পারে, বিশ্বের যেসব দেশে করোনা ছড়িয়েছে, সেসব দেশের অসংখ্য করোনা রোগী টেস্টের ভুলে পজিটিভ হয়ে গেছে; উহানের 'প্রকৃত করোনা'য় তারা আক্রান্ত হয়নি। এই 'টেস্টের ভুলে করোনা পজিটিভ হওয়া'কেই এই নিবন্ধের শুরুতে গুজব বলা হয়েছে।
স্থানীয় সংক্রমণের রহস্য করোনা পরীক্ষা পদ্ধতির মধ্যেই নিহিত আছে। এই ব্যাপারে সন্দেহ দূর করতে হলে দরকার একটা এক্সপেরিমেন্ট। যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ তেমন একটা ঘটেনি বা করোনা সংক্রমণ শেষ হয়ে গেছে বা যে কোনো দেশের সাধারণ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১০০০ রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হলে অনেকেরই করোনা পজিটিভ ফলাফল চলে আসবে। করোনার উপদ্রব কখনো বিশ্ব থেকে পুরো শেষ হয়ে গেলেও নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্তদের এই টেস্ট করলে অনেকের করোনা পিজিটিভ চলে আসবে। মূলত স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনাগুলো এভাবেই ঘটেছে।
শুধু যেসব দেশ ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা করেছে, সেসব দেশ নয়, যেসব দেশ ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা করেনি, সেসব দেশেও অসংখ্য রোগী টেস্টের ভুলে করোনায় আক্রান্ত না হয়েও করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, এটা বিশ্বাস করা অমূলক হবে না। বিশেষত যখন দেশে দেশে চীন বা অন্য দেশ ভ্রমণ ছাড়া, এমনকি কোনো করোনা রোগীর সংস্পর্শ ছাড়া অসংখ্য মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হতে দেখা যায়, তখন করোনা টেস্টের ত্রুটিকে এর জন্য দায়ী না করে উপায় থাকে না।

করোনা টেস্টে ব্যবহৃত 'আরটি পিসিআর' পদ্ধতি যে অনেক সময় ভুল ফলাফল দেয়, তা অনেকের জানা নেই বা এই পদ্ধতির প্রতি আস্থার কোনো অভাব নেই বলে দেশে দেশে স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনাগুলোর প্রতি প্রথমে প্রশ্ন সৃষ্টি হলেও অনেকে শেষে নিজেদেরকে এই উত্তর দিয়ে থাকেন, যেহেতু করোনা একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই চীন বা করোনার উপদ্রব আছে, এমন কোনো দেশের সাথে সম্পর্ক ছাড়াই, এমনকি কোনো  করোনা রোগীর সাথে সম্পর্ক ছাড়াই এসব লোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা যখন জানলাম, (১) করোনাভাইরাস কোনো 'ভাইরাস' নয়; (২) কোনো রোগ বায়ুবাহিত হতে পারে না; (৩) কোনো রোগ ছোঁয়াচে হতে পারে না; (৪) ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারে না;  (৫) একজনের শরীরে থাকা কোনো রোগ রক্ত ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে আরেকজনের শরীরে ছড়াতে পারে না, তখন আর স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে নিজেদেরকে এই বুঝ দেয়ার সুযোগ থাকে না যে, করোনা একটি ছোয়াঁচে বা ভাইরাস হবার কারণেই স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনাগুলো ঘটে। বরং এই সম্ভাবনা প্রবল হয়ে যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর পরীক্ষা নিউমোনিয়াসহ অন্য কিছু রোগে আক্রান্ত রোগীর পরীক্ষায় ব্যবহৃত মেশিন দিয়ে করানোর ফলেই এই বিভ্রান্তি।

পরীক্ষা পদ্ধতির ভুল বা বিভ্রান্তির আরো কিছু উদাহরণ দেখা যাক:
জাপানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা কিয়োডো নিউজের ওয়েবসাইটে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে '2 elderly passengers of virus-hit ship die in Japan' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'Two elderly Japanese passengers from the Diamond Princess, a coronavirus-hit cruise ship quarantined in Yokohama, have died, the health ministry said Thursday.
The deaths of the 87-year-old man from Kanagawa Prefecture and the 84-year-old woman from Tokyo raised the number of fatalities in Japan of people infected with the COVID-19 virus to three, the Ministry of Health, Labor and Welfare said.
The man, who had bronchial asthma and other pre-existing illnesses, was hospitalized on Feb. 11 after displaying symptoms such as fever and breathing difficulties, according to the ministry. He tested positive for the new coronavirus on Feb. 12.
The woman broke out in a fever on Feb. 5 but was not initially tested for the virus. She was finally hospitalized on Feb. 12 due to the persistent fever and other symptoms, and was confirmed to be infected with the virus the following day, the ministry said.
She had no pre-existing conditions and died on Thursday of pneumonia believed to be caused by the virus, it said.'
[https://english.kyodonews.net/news/2020/02/24c3b1bf4030-breaking-news-2-elderly-passengers-of-virus-hit-ship-died-japan-govt-source.html]

'COVID-19 Global Death Toll Surpasses 1,100 as Slower Pace of New Confirmed Cases in Outbreak's Epicenter Offers Some Hope' শিরোনামে টাইম ডট কম ওয়েবসাইটে ২৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে (BY HILLARY LEUNG , SANYA MANSOOR , AMY GUNIA , JASMINE AGUILERA , TARA LAW AND JOSIAH BATES) বলা হয়, 'A San Diego hospital says an American citizen who was also evacuated from Wuhan was temporarily discharged after initial testing suggested they had not been infected with the virus. But further testing revealed that the patient had actually contracted the disease and they subsequently returned to the hospital. Health officials said on Tuesday that the error occurred because of a labeling error on samples.'
[https://time.com/5772481/china-coronavirus-latest/]

'করোনাভাইরাস: প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা' শিরোনামে বিবিসি বাংলায় ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, '১৪ দিনের বেশি কোয়ারেন্টিনে থাকার পর আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ না থাকায় ইয়োকোহামার একটি ক্রুজ জাহাজ থেকে যাত্রীদের নামা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
জাপানের উপকূলে কোয়ারেন্টিন জাহাজ থেকে আরোহীদের নামিয়ে আনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। যাইহোক, কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজে থাকা ১৮ জন আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানের পর পরীক্ষায় জানা গেছে যে তারা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। এর পর আরো প্রায় ৩০০ জন মার্কিন নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন।
জাহাজটি থেকে দেড় শতাধিক অস্ট্রেলীয় নাগরিক এরইমধ্যে ডারউইনে পৌঁছেছেন, যেখানে তারা আরো দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ডারউইনে পৌঁছানোর পর ছয় জন অসুস্থতা বোধ করায় তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই জনের সংক্রমণ রয়েছে। তবে এর আগে জাপান ছাড়ার আগে করা পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল যে, তাদের সংক্রমণ নেই।' [https://www.bbc.com/bengali/news-51596145]

'China coronavirus outbreak: All the latest updates' শিরোনামে আল জাজিরায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'Man with coronavirus in Egypt recovering, no longer a carrier: WHO
The World Health Organization (WHO) said that the person previously confirmed as having coronavirus in Egypt is on his way to recovery, after latest tests showed he was "no longer carrying the virus".
"He will remain in quarantine until the full 14-day period is over and will be undergoing further required tests to ensure he was fully recovered," WHO spokeswoman Inas Hamam said in an email.'
[https://www.aljazeera.com/news/2020/02/cloneofcloneofcloneof200215224437270-20021623180-200218231013395.html]

'করোনা পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা' শিরোনামে প্রথম আলোয় ২৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে (শিশির মোড়ল কর্তৃক তৈরিকৃত) বলা হয়, 'রাজধানীর (ঢাকা, বাংলাদেশ) উত্তরায় নিজের মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারছিলেন না চিকিৎসক ছেলে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো কোভিড ১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষার ফল দেখতে চেয়েছিল। রাজধানীর একটি ছোট ক্লিনিকে রেখে তাঁর মায়ের নমুনা পরীক্ষা হয়। ১২ এপ্রিল আইইডিসিআরে দেওয়া সনদে দেখা যায়, মা করোনায় আক্রান্ত নন।
চিকিৎসক ছেলে প্রথম আলোকে বলেন, 'সনদ পাওয়ার পরপরই মাকে আমরা রাজধানীর একটি বড় হাসপাতালে ভর্তি করাই। মাকে তারা লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যায়।' কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত আইইডিসিআরকে দিয়ে পরীক্ষা করায়, যা পরিবারের সদস্যরা জানতেন না। ১৩ এপ্রিল আইইডিসিআরের দেওয়া সনদে দেখা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। ওই চিকিৎসক প্রশ্ন করেছেন, 'এক দিনের ব্যবধানে কি এটা সম্ভব?'
ওই হাসপাতাল চিকিৎসকের মাকে আর রাখেনি। বাধ্য হয়ে তাঁকে উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন ছেলেরা। তিনি ভালো হয়ে উঠছিলেন। সরকারি ওই হাসপাতাল নমুনা পরীক্ষা করায়। ২২ এপ্রিল আইইডিসিআরের সনদ বলছে, তাঁর শরীরে করোনা ছিল না। ১০ দিনের ব্যবধানে এটা কি হওয়া সম্ভব? ...'
[https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1653422]

এভাবে একই লোকের দু'রকম ফলাফল আসার অনেক ঘটনা ঘটতে পারে আমাদের অজান্তেও। এমন অনেক ঘটনাও ঘটে, একই লোকের একই সাথে করা পরীক্ষায় দুই ল্যাবে দু'রকম ফলাফল! কিছুদিন আগে প্রথম আলোয় চিঠিপত্র বিভাগে একজন লোক পরীক্ষা পদ্ধতির এই বিভ্রান্তির কথা উল্লেখ করেছিলেন। আমার এক বন্ধুও সেদিন এরকম একটা উদাহরণ দিয়েছিলেন। বলেছেন, 'আমাদের এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তবে একটা তথ্য দিতে পারি। আমার পরিচিত একজনের পুরো পরিবারের করোনা পজিটিভ আসে। কিন্তু ৩ দিনের ব্যবধানে তারা আবার টেস্ট করালে নেগেটিভ আসে। প্রথমবার টেষ্ট করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে, পরে খুলনা থেকে করায়।'

'যবিপ্রবি'র পরীক্ষায় ১৫ জনের করোনা পজেটিভ, আইইডিসিআরে নেগেটিভ!' শিরোনামে সময় নিউজের ওয়েবসাইটে ৯ মে ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'ঝিনাইদহে করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন আক্রান্তরা। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নমুনা পরীক্ষায় পজেটিভ হলেও মাত্র চার দিনের ব্যবধানে একই রোগীর নমুনা পরীক্ষায় ঢাকার আইইডিসিআর থেকে নেগেটিভ হওয়ায় চরম উদ্বিগ্ন অন্তত ১৫ জন। কেন এমন হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি সিভিল সার্জন।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীসহ ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হন বলে জানা যায়। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো নমুনায় তাদের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। কিন্তু বেশিরভাগেরই কোনো উপসর্গ না থাকায় তাদের নমুনা আবারও সংগ্রহ করে দ্বিতীয় দফায় ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। শুক্রবার আসা সাতজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। দুই দিনের ব্যবধানে সংগ্রহ করা নমুনায় রিপোর্ট পাল্টে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন ভুক্তভোগীরা। তবে দুই ল্যাব থেকে দুই প্রকার রিপোর্ট আসার সঠিক কারণ জানাতে পারেননি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।
সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, এটার অনেক কারণ থাকে। কানেকশন বা ট্রান্সপোর্টে নিয়ে যাওয়া অনেক কিছুর ব্যাপার থাকে। এছাড়া ভাইরোলোজির যারা তারা এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।
গত ২৮ এপ্রিল আক্রান্তদের দ্বিতীয় দফায় নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো ১৫ টি নমুনার সবগুলোই নেগেটিভ আসে বলে জানান জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা।
জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, ১৫ জনের যাদের জানানো হয়েছিল করোনা পজেটিভ তাদের কেউই করোনায় আক্রান্ত নন।
সচেতনমহল বলছেন, করোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষায় স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও সচেতন হতে হবে।
সনাক সদস্য আমিনুর রহমান টুকু বলেন, মেশিনের কোনো ত্রুটি থাকতে পারে বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে তাদের ভুল হতে পারে। তবে তাদের সতর্ক হতে হবে।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, এ পর্যন্ত জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৬০৩ টি। যার মধ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে ৩১৯ টির। [https://www.somoynews.tv/pages/details/212589]

আরেকটি প্রতিবেদন দেখা যাক। 'প্রথম আলোয় ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে প্রকাশিত (আপডেট: ১৭ মে ২০২০) ''করোনা 'পজিটিভ হয়ে' মৃত্যু, দ্বিতীয় পরীক্ষায় 'নেগেটিভ'' শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'রাজশাহীতে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এক ব্যক্তি মারা যান গত রোববার। প্রথম দফা নমুনা পরীক্ষায় করোনা 'পজিটিভ' ছিলেন তিনি। সে হিসেবে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম ব্যক্তি তিনি। তবে এক সন্দেহ থেকে দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষার জন্য মৃত্যুর আগের দিন তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন 'নেগেটিভ' এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যক্তির ফুসফুসে পানি ও বাতাস জমায় চিকিৎসকেরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি বলে জানান তিনি।

৮০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি বাঘা উপজেলার একটি গ্রামে। তাঁকেই রাজশাহীতে করোনায় মৃত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। নিশ্চিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে আর কারও মৃত্যু হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল ওই বৃদ্ধ জ্বর ও প্র¯্রাবের যন্ত্রণা নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্স-রে করার পর চিকিৎসকেরা সন্দেহ করেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। চিকিৎসকেরা তাঁর নমুনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষার প্রতিবেদন 'পজিটিভ' আসে। তার পর থেকে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়। কিন্তু এর আগেই অনেক চিকিৎসক ও নার্স ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এমন ৪২ জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া ওই রোগীর সঙ্গে থাকা তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু পরীক্ষায় একটি প্রতিবেদনও 'পজিটিভ' আসেনি। ফলে চিকিৎসকেরা ওই রোগীর দ্বিতীয় দফায় নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। গত শনিবার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরের দিন সেই নমুনা পরীক্ষার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে রাজশাহী বিভাগীয় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা কমিটির সিদ্ধান্ত, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত সবাইকে নগরের ভেতরে নির্ধারিত জায়গায় দাফন করা হবে। তাই ওই বৃদ্ধের লাশ বাঘা উপজেলার গ্রামের বাড়িতে নিতে দেওয়া হয়নি। অবশ্য স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে নির্ধারিত কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত নগরের হেতেমখাঁ কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, দ্বিতীয় পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির প্রতিবেদন করোনা  'নেগেটিভ' এসেছে। তিনি আসলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তাঁর ফুসফুসে পানি ও বাতাস জমেছিল। এ কারণেই তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।' [https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1653900]

প্রাসঙ্গিক আলোচনা:
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ''প্রথম দফা নমুনা পরীক্ষায় করোনা 'পজিটিভ' ছিলেন তিনি। সে হিসেবে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম ব্যক্তি তিনি। তবে এক সন্দেহ থেকে দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষার জন্য মৃত্যুর আগের দিন তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন 'নেগেটিভ' এসেছে।''
একই রোগীর করোনা পরীক্ষায় দু'বার দু'রকম ফলাফল কিভাবে সম্ভব? রাজশাহী জেলায় ''করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম ব্যক্তি'' হিসেবে যাকে গণ্য করা হয়, তিনি মৃত্যুর আগের দিনের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ছিলেন! তবু তিনি কিভাবে ''করোনায় মৃত'' বলে সাব্যস্ত হলেন?
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ''নিশ্চিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে আর কারও মৃত্যু হয়নি।''
রাজশাহীতে আর কেউ তাঁর আগে করোনায় মৃত্যুবরণ না করাটা কয়েকটি প্রশ্নের সৃষ্টি করে: (১) রাজশাহীতে তাঁর আগে তাহলে কে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে? (২) তিনি কোত্থেকে, কার কাছ থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন?
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ''চিকিৎসকেরা তাঁর নমুনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষার প্রতিবেদন 'পজিটিভ' আসে। তার পর থেকে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়। কিন্তু এর আগেই অনেক চিকিৎসক ও নার্স ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এমন ৪২ জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া ওই রোগীর সঙ্গে থাকা তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু পরীক্ষায় একটি প্রতিবেদনও 'পজিটিভ' আসেনি।''
প্রশ্ন সৃষ্টি হয়, করোনাভাইরাস যদি সত্যিই ভাইরাস এবং ছোঁয়াচে হয়, তাহলে 'করোনা পজিটিভ' ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা ৪২ জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর করোনা পরীক্ষায় একটি প্রতিবেদনও 'পজিটিভ' আসেনি কেন? উত্তর কে দেবে?

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ''রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, দ্বিতীয় পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির প্রতিবেদন করোনা 'নেগেটিভ' এসেছে। তিনি আসলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তাঁর ফুসফুসে পানি ও বাতাস জমেছিল। এ কারণেই তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।''

যদি তা-ই হয়, তাহলে প্রথমবারের পরীক্ষায় কেন ফলাফল 'পজিটিভ' এসেছিল? এমনকি তাঁকে কেন রাজশাহীতে ''করোনায় মৃত প্রথম ব্যক্তি'' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল?


করোনাভাইরাসের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে এর আগের আলোচনায় একটি প্রতিবেদনের রেফারেন্স দেয়া হলো। এখানে আবার ওই প্রতিবেদনের দু'টি বাক্য উল্লেখ করতে হচ্ছে। 'করোনাভাইরাস: শনাক্তকরণ পরীক্ষা পদ্ধতি কি ত্রুটিপূর্ণ?' শিরোনামে বিবিসি বাংলায় ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে (বিবিসির স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিনিধি জেমস গ্যালাঘার কর্তৃক তৈরিকৃত) বলা হয়, ''আরটি-পিসিআর' নামে এই পরীক্ষা এইচআইভি এবং ইনফ্লয়েঞ্জার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় এবং এটা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।'
'নতুন করোনাভাইরাস সনাক্তের জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষাটি ত্রুটিযুক্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ভিত্তিক।' [https://www.bbc.com/bengali/news-51523745]

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top