করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য (পর্ব-৪৭) : লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন এগুলো মহামারীকে আরো ভয়াবহ করে তোলে

11 minute read
0

 করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য

[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]



ধরা যাক, ভবিষ্যতে উহানের মতো কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর যখন সবার মনে এই বিশ্বাস থাকবে, কোনো রোগ একজন থেকে আরেকজনের শরীরে বায়ু বা স্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে না এবং কোনো এলাকায় মহামারী তখনই দেখা দিতে পারে, যখন সে এলাকার বাতাস বা পানি কোনো কারণে দূষিত বা বিষাক্ত হয়ে যায়, তখন সবাই কী করবে? নিশ্চয়ই এলাকাটি ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবে, যেখানে এরকম কোনো সমস্যা নেই। আর ইতোমধ্যে যারা রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে, তাদেরকে কী করবে? তাদেরকে আক্রান্ত এলাকায় রেখে চলে যাবে? নাকি হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক পরে পুরো শরীর ত্রুটিমুক্তভাবে ঢেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে জীবন্ত পুড়ে ফেলবে বা মাটিতে পুঁতে ফেলবে? কেন, তাদের কাছ থেকে যদি অন্য কেউ আক্রান্ত হতে না পারে, তাহলে তাদেরকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে তাদের চিকিৎসা এবং সেবা করলে কী ক্ষতি হবে?

কোনো ক্ষতি হবে না।

বিজ্ঞানের অনেক ধারণা মানবজাতির মহাক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় অনেক সময়। মানুষের কল্যাণের জন্য ধারণাগুলোর সৃষ্টি হলেও নিবিড়ভাবে চিন্তাভাবনা এবং পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া ধারণাগুলো বাজারে ছেড়ে দেয়ার ফলে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। বিজ্ঞানের ছোঁয়াচে, বায়ুবাহিত রোগের ধারণা; ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু মানুষের ক্ষতি করার ধারণা এ পর্যন্ত মানুষের কত গুরুতর ক্ষতি করেছে, একটু ভাবলেই সবার বুঝে আসবে। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক ক্ষতি তার সর্বশেষ জ্বলন্ত উদাহরণ। আইসোলেশন, লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, সোশাল ডিসটেন্স এ রকম নতুন অসামাজিক আইনগুলো বিজ্ঞানের আগের কিছু ভুল ধারণার বিষাক্ত ফল। সেই বিষাক্ত ফলের বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা, ব্যাপক বেকারত্ব, ক্ষুধা, অভাব, হতাশা, আত্মহত্যা, ক্ষুধার জ্বালায় দেশে দেশে জনগণের সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষ ইত্যাদি আরো কতো কী!

''Coronavirus: Chile protesters clash with police over lockdown' শিরোনামে ১৯ মে ২০২০ তারিখে বিবিসি নিউজে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, 'Protesters and police have clashed on the outskirts of the Chilean capital Santiago amid tension over food shortages during lockdown.

Local television showed police using tear gas and water cannon to quell unrest on the streets of El Bosque, where poverty is high.

President Sebastián Piñera, in a televised address after the protests, pledged to get food to those in need.

Chile has more than 46,000 cases of Covid-19 so far, with 478 deaths.

A recent surge in cases prompted the national capital to go under a strict and total lockdown this weekend.
In a separate development on Monday, dozens of members of Chile's senate and two government ministers went into preventative isolation following recent contact with infected colleagues.

Why were there protests?
Groups of protesters were seen throwing stones and setting fires in parts of the El Bosque neighbourhood.
District mayor Sadi Melo told local radio it was facing a "very complex situation" because of "hunger and lack of work".

In a statement, local officials said they had distributed about 2,000 aid packages but warned the government they could not meet demand.' [https://www.bbc.com/news/world-latin-america-52717402]

'Coronavirus: in Zimbabwe, people risk Covid-19 death just to fetch water' শিরোনামে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে ১৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে (by Tonderayi Mukeredzi) বলা হয়, 'Spread of coronavirus will be harder to control without running water, essential for hygiene
Zimbabwe's public health system faces total collapse if most of population becomes infected
Dry taps are forcing residents in cities across Zimbabwe to spend time outside collecting water at community bore holes, instead of staying indoors for a 21-day coronavirus national lockdown.

Even as the country enters possibly the last days of isolation, bore holes have emerged as possible vectors for the spread of deadly Covid-19 disease, as urbanites, mostly women and children, are forced to disregard social distancing rules to fill buckets to take home.
The southern African country of 14.5 million people has so far recorded 23 cases and three deaths since global outbreak began, but the actual number could be much higher. Zimbabwe has only one public Covid-19 test centre, at a government hospital in the capital Harare, where over 600 tests have been carried out.

Zimbabwe's public health care system, already under the strain of a crippled economy, faces shortages of basic drugs and lacks essential equipment and even running water. Health experts say Covid-19 will be harder to control in places without running water, and many people could die.
That's a horrible scenario for people like Marian Chiroodza, who lives in Chitungwiza, a densely populated satellite town 30km southeast of Harare.

''It is a double-edged sword. If I stay home without water, I could still die from cholera or typhoid. I need water for cooking and for use in the toilet daily apart from other uses,'' the 48-year-old mother of four said. ''So, I have no choice but to patronise the bore hole every other day to fetch water because tap water scarcely comes.''

In Zengeza, another suburb in Chitungwiza, Cuthbert Ngonyama owns a bore hole and makes brisk business selling water to hordes of people.'
[https://www.scmp.com/news/world/africa/article/3080374/zimbabwe-people-risk-covid-19-death-just-fetch-water]

এরকম আরো কত সংঘর্ষের ঘটনা কত দেশে ঘটেছে, কোনো হিসাব নেই। সবই লকডাউনের নেতিবাচক ফলাফল। উহানে লকডাউন দিয়ে কি কোনো লাভ হয়েছে? ইতালিতে? লাম্বার্ডিতে? ইরানের কোম শহরে? নিউইয়র্কে? ইতালির 'কডোঙ্গো' শহরে লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে দৈনিক যুগান্তরে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে 'উহানের মতো 'ভুতুড়ে নগরী'তে পরিণত ইতালির যে শহর' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'রাস্তাঘাটে কোনো যানবাহন নেই। ফুটপাতে নেই কোনো পথচারীর হাঁটার শব্দ। দোকানপাটও সব বন্ধ। একেবারে পিনপতন নীরবতার শহরে পরিণত ইতালির কডোঙ্গো।
এ যেন আরেক উহান। বলতে গেলে উহানের মতো 'ভুতুড়ে শহরে' পরিণত হয়েছে ইতালির কডোঙ্গো।
উত্তর ইতালির লোদিপ্রদেশের ছোট্ট শহর কডোঙ্গো। সম্প্রতি শহরটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত দুই রোগীর মৃত্যু হয় সেখানে। এ ছাড়া ৫০ জনের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস আতঙ্কে নিশ্চুপ হয়ে গেছে শহরটি। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় বের হতে দেখা যাচ্ছে না। বের হয়েও লাভ নেই কোনো। কারণ করোনাভাইরাস বিস্তার ঠেকাতে শহরের স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, শপিংমলের অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে বার্তা সংস্থা এএফপিকে পাওলা নামের এক বাসিন্দা বলেন, 'কডোঙ্গো এখন একটা ভুতুড়ে শহর। করোনাভাইরাস আমাদের জন্য ভয়ঙ্কর এক অবস্থা তৈরি করেছে। মানুষজন তাদের ঘরে ঘরে বন্দি, কোনো মানুষ রাস্তায় নেই। এমনটি বেশি দিন চললে করোনায় নয়, না খেয়েই মরতে হবে আমাদের।'
তিনি বলেন, 'স্টেশন বন্ধ রয়েছে। কেউ টিকিট বিক্রি করছে না। আর আমার মতো কোনো যাত্রীও ট্রেনের অপেক্ষায় প্লাটফর্মে বসে নেই। হেঁটেই বাড়ি যাচ্ছি।'
শহরের ভেন্ডিং মেশিন থেকে হালকা খাবার ও পানীয় কেনার জন্য ভয়ে ভয়ে ঘর থেকে বের হয়েছেন এরিকা নামের এক নারী।
এএফপিকে এরিকা বলেন, '৫০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত শুনে শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সবাই সাবধানে থাকছি। ঘরে কোনো খাবার নেই। অনন্যোপায় হয়ে বের হয়েছি। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই যে, সুপারমার্কেটগুলো আদৌ খোলা থাকবে কিনা।'
সবকিছু বন্ধ থাকলেও কডোঙ্গোতে ফার্মেসিগুলো খোলা রেখেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে এএফপিকে রোসা কাভালিল নামের এক ফার্মেসি মালিক বলেন, 'প্রচন্ড ভয় নিয়ে কাজ করছি আমরা। সরকারের নির্দেশ না থাকলে ফার্মেসি বন্ধই রাখতাম। আমাদের এখন ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।'
তিনি বলেন, 'এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। এ ছাড়া অনেকেই ব্যাকটেরিয়া রোধক, অ্যালকোহল এবং ব্লিচিং পাউডার কিনে মজুদ করে রাখছেন।'
উল্লেখ্য, লোম্বার্ডি অঞ্চলের শহর কডোঙ্গোকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তারের উৎপত্তিস্থল হিসেবে দাবি করছেন ইতালির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
গত শুক্রবার ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইতালিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে তাদের নিজেদের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়। শনিবার মারা যান আরও একজন।
এর পর লোম্বার্ডিতে ১৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত করা হয়।
এ ঘটনার পর পরই ৫০ হাজার মানুষের ১০টি শহর বন্ধ করে দেয়া হয়। এসব শহরের জনগণকে বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। স্কুল, বার, চার্চ, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ জনসমাগমস্থলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন চিকিৎসকও রয়েছেন। ইতালিতে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ঘটা করোনাভাইরাসের প্রথম ঘটনা এটি।
যে পাঁচজন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন, তারা কেউ চীন সফর করেননি।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে বলেন, অত্যন্ত উচ্চ মাত্রার সাবধানতা নিয়ে কাজ করছেন তারা। এখন পর্যন্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও গণমাধ্যমকে জানান তিনি।' [https://www.jugantor.com/international/281931]

উহান বা কডোঙ্গোর মতো যেসব শহরে বা দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ হয়েছে, সেসব শহর বা দেশে লকডাউন দিয়ে কী লাভ হয়েছে? লকডাউন কার্যকর করার ১৪ বা ২০ দিন পর কি আক্রান্ত হওয়া বন্ধ হয়েছে? কমে গেছে? কেন বন্ধও হয়নি, কমেওনি?

কেন, তা ভেবে দেখা দরকার। এখন (নিবন্ধের এই পর্যায়ে এসে) অবশ্য সামান্য ভাবলেই একমাত্র কারণটাও সহজেই পরিষ্কার হবে। উহানের বায়ুতে অদৃশ্য রাসায়নিক অস্ত্র মিশ্রিত হবার পর যতদিন উহানের বায়ুতে সেই রাসায়নিকের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল, ততদিন উহানের মানুষ আক্রান্ত হতে থাকলো। বায়ুপ্রবাহের কারণে যখন ধীরে ধীরে বায়ু থেকে ওই রাসায়নিকের অস্তিত্ব লোপ পেতে লাগলো, তখন মানুষের আক্রান্ত হবার হারও কমে যেতে লাগলো। এভাবে অন্য দেশের যেসব শহরের বায়ুতে উহানের মতো অদৃশ্য রাসায়নিক মিশেছিল, সেসব শহরেও লকডাউন দিয়ে লাভ হয়নি। সময়ের ব্যবধানে বায়ুতে রাসায়নিকের উপস্থিতি লোপ পেতে লাগলো, মানুষের আক্রান্ত হবার হারও কমতে লাগলো। লকডাউনের সাথে মানুষের আক্রান্ত হবার হার হ্রাস পাবার কোনো সম্পর্ক ছিল না। বরং লকডাউনের সাথে, সংশ্লিষ্ট শহরের মানুষের আক্রান্ত হবার হার বৃদ্ধি পাবার সরাসরি সম্পর্ক ছিল। কেন সম্পর্ক ছিল? যেহেতু করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে নয়, বরং বায়ুতে ছড়িয়ে দেয়া অদৃশ্য রাসায়নিক বিষের প্রতিক্রিয়া, তাই লকডাউন করার কারণে যারা আক্রান্ত হবার আগে শহর থেকে বের হতে পারেনি, বরং লকডাউন করার ফলে শহরে অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, সময়ের ব্যবধানে ঐ রাসায়নিক বিষ তাদের ফুসফুসেও প্রবেশ করেছে এবং তারাও নিউমোনিয়ায় (করোনাভাইরাসে) আক্রান্ত হয়ে গেছে। এজন্য দেখা যায়, বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর কিছুদিনের মধ্যে নিজ দেশের অনেক নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। এদের অধিকাংশই তখনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। অল্প কিছু মানুষ আক্রান্ত হলেও তাদের সাথে একই ফ্লাইটে ফিরে আসা কেউ তাদের কাছ থেকে আক্রান্ত হয়নি। যদি এদেরকে চীন থেকে কোনো কারণে ফেরত আনা না হতো, কী অবস্থা হতো, ভাবলেই বুঝা যায়।

শুধু ভাইরাস, জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া নামক বিজ্ঞানের সৃষ্ট কল্পিত ভুত অস্তিত্বশীল থাকার কারণে এবং উহানে উৎসারিত 'অজ্ঞাত কারণ নিউমোনিয়া'কে ছোঁয়াচে বলে প্রচারের কারণে মানবজাতির এই দুর্দশা। নয়তো অনেক অনেক মৃত্যু হতো না; অনেক অনেক অঘটন ঘটতো না; করোনাভাইরাসের পরোক্ষ প্রভাবে তেমন কারো মৃত্যু হতো না; মানুষে মানুষে দূরত্ব কমতো না; মনুষত্ববোধের অপমান আরো কম হতো; সর্বোপরি উহানে উৎসারিত 'অজ্ঞাত কারণ নিউমোনিয়া'র রহস্য উদঘাটিত হতো আরো আগে, খুব সহজে।

এই নিবন্ধের শিরোনামের সাথে যুক্ত করা হয়েছে, 'করোনাভাইরাস বিজ্ঞানের অজ্ঞতা এবং নিষ্ঠুরতার ফল'।
বিজ্ঞানের অজ্ঞতা কী, আশা করি কারো বুঝার বাকি নেই। আর নিষ্ঠুরতা কী, তা কারো এখনো বুঝে না এলে আবার তাকাতে হবে করোনাভাইরাসের উৎসের দিকে। বুঝে আসবে এটা কোনো ভাইরাস নয়, বিজ্ঞানের নিষ্ঠুরতা।

এটা কোনো ভাইরাস নয় এবং ছোঁয়াচে রোগও নয়, এই সম্পর্কে অনেক উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে এই পর্যন্ত। আমরা আরো একবার দেখি, চীনে কী হয়েছে? চীনে উপদ্রুত 'ভাইরাস' চীনের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেলো অনেক অনেক দূরে, কিন্তু চীনের কী হলো?

চীন থেকে অনেক অনেক দূরের বেশ ছোট দেশ নয়, তবু পুরো দেশকে লকডাউন করা হলো, এমন একটি দেশ ইতালি। কিন্তু পুরো চীনকে লকডাউন করতে হয়নি। শুধু ইতালি নয়, আরো অসংখ্য দেশে বৃহৎ পরিসরে লকডাউন ঘোষণা করতে হলো, কিন্তু চীনের কাছের ছোটবড় অনেকগুলো দেশকেও পুরোপুরি লকডাউন করতে হয়নি। এমনকি উহান ছাড়া চীনের আর কোনো শহরে বৃহৎ পরিসরে লকডাউন ঘোষনা করতে হয়নি। কেন? ভাইরাস কাছের দেশ বা শহরে আক্রমণ না করে দূরে গিয়ে থাবা দিলো কেন? দূরের লোকদের প্রতি কি ভাইরাসের কোনো ক্ষোভ ছিল? কাছের দেশগুলোর সাথে খাতির! যেন ঠিক মানুষের মতো আচরণ! ভাইরাসের আচরণ মানুষের মতো হয় কী করে! ভাইরাসেরও কি মানুষের মতো বুদ্ধি আছে? চিন্তাশক্তি আছে? ভাইরাসও কি পরিকল্পনামফিক চলে?

করোনাভাইরাস সম্পর্কে ইতোমধ্যে ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, লক্ষণ প্রকাশ পাবার আগেই এটি একজন আক্রান্ত লোক থেকে সুস্থ লোকে ছড়িয়ে পড়ে। উহানে যখন করোনার উপদ্রব শুরু হলো, তখন উহানকে লকডাউন করার আগে উহান থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ কি চীনের অন্যান্য শহরে/এলাকায় যায়নি? গিয়েছে। অনেক আক্রান্ত রোগী গিয়েছে। কিন্তু যেসব শহরে গিয়েছে, সেসব শহরকে লকডাউন করা ছাড়া কেন সেসব শহরে করোনাভাইরাস লোম্বার্ডি, কোম, মাদ্রিদ, সাও পাওলো, নিউইয়র্কের মতো ভয়াবহ হয়নি? লোম্বার্ডি, কোম, মাদ্রিদ, নিউইয়র্ক এসব শহরকে লকডাউন করেও যে ভাইরাসের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, সে ভাইরাস কিভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকলো চীনের এমন সব শহরে, যেখানে উহান থেকে করোনায় আক্রান্ত অনেকে গিয়েছে?

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস চীন থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থিত বিশ্বের অনেক দেশে 'উহানের চেয়েও ভয়াবহ' রূপ ধারণ করেছে। কিন্তু 'চীনের কাছের কোনো দেশে' অন্য অনেক দেশের মতো ভয়াবহ হয়নি। শুধু তা-ই নয়, চীনের উহান ছাড়া খোদ 'চীনের অন্য কোনো শহরে'ও ভয়াবহ হয়নি। উহানে করোনার উপদ্রবের পর প্রথম অবস্থায় উহান থেকে আক্রান্ত অনেক মানুষ চীনের অন্য অনেক শহরে ফিরে গেছে। কিন্তু কোনো লকডাউনও দিতে হয়নি কোনো শহরকে! এমনকি উহান ছাড়া কোনো শহরে সর্বোচ্চ ১০০ জন মানুষও মারা যায়নি! সর্বোচ্চ ২২ জন মারা গেছে হেনান শহরে। উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত ৮ জুনের পরিসংখ্যান এখানে দেয়া হলো।
কিন্তু কেন?

'চীনের নতুন ভাইরাস এবার যুক্তরাষ্ট্রেও' শিরোনামে প্রথম আলোয় ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'গত সোমবার চীন প্রথম স্বীকার করে ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। এর আগে চীন দাবি করেছিল, ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষ নয়, প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ পায়নি তারা। আর ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে সামুদ্রিক খাবার থেকে। তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা শুরু থেকেই ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানান। তাঁদের হিসাবে চীন যা বলছে, তার চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি।
বেইজিং ও সাংহাইসহ চীনের বড় শহরগুলোতে ২৯১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই উহান শহরের। শহরটির ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দা এখন এই প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিতে রয়েছে। এই রোগ প্রথম ধরা পড়ে গত বছর। রোগের প্রাদুর্ভাব সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজার থেকে হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই বাজারে জীবন্ত সামুদ্রিক প্রাণীও বিক্রি হয়।' [https://www.prothomalo.com/northamerica/article/1635600]

'এশিয়ায় ছড়াচ্ছে নয়া ভাইরাস' শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে ২১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'প্রতিদিনই নতুন কেউ আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা গত এক সপ্তাহেই তিনগুণ ছাড়িয়ে গেছে। চীনের মধ্যাঞ্চলের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে নতুন এক ভাইরাস দেশের অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে।
উহান কর্তৃপক্ষ গত দু'দিনে ১৩৯ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।চীনা নববর্ষের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের ঘরে ফেরার যজ্ঞের মধ্যে রাজধানী বেইজিংয়ে দু'জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।'  [https://www.jugantor.com/todays-paper/ten-horizon/269371]

কেন এই নিবন্ধের নাম এভাবে রাখা হয়েছে, তা যদি কারো বুঝতে বড্ড কষ্ট হয়, তারা এই দুটি প্রতিবেদনের নিচে দাগ দেয়া বাক্যগুলোর সাথে এর আগের কথাগুলো মিলিয়ে নিন। এরপরও না বুঝলে বুঝে নিতে হবে, নিবন্ধটি যে লিখেছে, সে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বোধ।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top