করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য
[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]
চীন ছাড়া অন্য যেসব দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, সেসবের অধিকাংশতেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে 'অজানা কারণে'। কিছু প্রতিবেদন/নিবন্ধ দেখা যাক এ সম্পর্কে:
'What is coronavirus and what are the symptoms?' শিরোনামে বিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে বিবিসির স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানের সংবাদদাতা জেমস গালাঘর কর্তৃক তৈরিকৃত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়,
'How fast is it spreading?
Thousands of new cases are being reported each day. However, analysts believe the true scale could be 10 times larger than official figures.
Outbreaks have now occurred in South Korea, Italy and Iran, raising fears that it could become a pandemic. A pandemic is declared when an infectious disease threatens different parts of the world simultaneously.
The WHO has said it is concerned about the number of cases with no clear link to China or other confirmed cases. It has said the window of opportunity to contain the virus was "narrowing".
With colds and flu tending to spread fastest in the winter, there is hope the turning of the seasons may help stem the outbreak.
However, a different strain of coronavirus - Middle East respiratory syndrome - emerged in the summer, in Saudi Arabia, so there's no guarantee warmer weather will halt the outbreak.' [https://www.bbc.com/news/health-51048366]
'China coronavirus outbreak: All the latest updates' শিরোনামে আল জাজিরার ওয়েবসাইটে ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'WHO chief Ghebreyesus in Geneva said he was concerned about cases outside China with 'no epidemiological link'.
"Although the total number of COVID-19 cases outside of China remains relatively small, we are concerned about the number of cases with no clear epidemiological link, such as travel history to China or contact with a confirmed case," he told reporters during a media briefing.
The WHO chief said he was concerned about the potential for COVID-19 to spread in countries with "weaker health systems".'
[https://www.aljazeera.com/news/2020/02/cloneofcloneofcloneofcloneofcloneof2002152244372-200220231446112.html]
উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দু'এক মাসের মধ্যেই পৃথিবীর অন্য অনেক দেশে করোনাভাইরাসের উপদ্রব হয়েছে 'অজানা কারণে' বা স্থানীয়ভাবে, এই সম্পর্কে এই নিবন্ধে অনেক অনেক উদাহরণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার 'অজানা কারণ' কী?
জার্মানির হাইন্সবার্গ শহরকে কেন জানি একটু আগে উল্লেখিত আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধের লেখক জার্মানির 'উহান' (করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র) বলে আখ্যায়িত করে ফেলেছেন!
একটু আগে 'কিভাবে বলা যায় অন্য দেশে করোনার উপদ্রব উহান থেকেই হয়েছে?' এই প্রশ্ন যে ৪টি ভিত্তির উপর করা হয়েছে, যদি যে কোনো সচেতন ব্যক্তি ভিত্তিগুলো নিয়ে একটু ভাবে, তার মনে এই উত্তরটিই সবচেয়ে বেশি সঠিক মনে হতে পারে, এসব শহরে/স্থানেও উহানের মতোই কিছু ঘটেছে। যে কারণে উহানে করোনাভাইরাসের উপদ্রব দেখা দিয়েছে, সেই রকম কোনো কারণেই অন্য দেশেও করোনাভাইরাসের উপদ্রব দেখা দেয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
এই অনুমানের পেছনে কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই। আচ্ছা বলুন, এরকম কর্মকান্ডে মানুষ কি সচরাচর কোনো প্রমাণ পায়? নাকি যারা এরকম কর্মকান্ড ঘটায়, তারা কোনো প্রমাণ বা চিহ্ন রাখে? অনেক কিছু পূর্বাপর ঘটনার যোগফল মিলিয়ে বুঝে নিতে হয়। যেমন কোথাও কোনো দেয়ালের এক পাশ থেকে দেখা যাচ্ছে, দেয়ালের বিপরীত পাশ থেকে ধোঁয়া উড়ছে, তখন এটা নিশ্চিত হওয়া যায়, দেয়ালের বিপরীত পাশে নিশ্চয়ই আগুন জ্বলছে।
এবার দুটো গল্প দেখা যাক:
(এক) এক লোক অনেক পরিশ্রমের পর একটা যন্ত্র তৈরি করেছে। যন্ত্রের কাজ হচ্ছে ১০০ ফুট দূরে থেকেও যে কোনো ফলের গাছের দিকে যন্ত্রটি কিছুক্ষণ তাক করে ধরে রাখলে ৮-১০ দিনের মধ্যে গাছের ফলগুলো এমনভাবে পঁচে ঝরে যায়, যেন মনে হয় সেগুলো এমনি এমনি নষ্ট হয়ে গেছে। তার যন্ত্র তৈরির উদ্দেশ্য পুরোপুরি মহৎ ছিল না। ভেবেছে, কেউ তার ফল বাগানের কোনো ক্ষতি করলে যে লোক এই ক্ষতি করবে, তার ফল বাগানের ফলগুলো যন্ত্রটি দিয়ে নষ্ট করে ফেলবে, যেন সে বুঝতে না পারে। তার এই যন্ত্র তৈরির কথা এলাকার মানুষের জানা ছিল। তবে কেউ জানতো না যন্ত্রটি সত্যিই কিভাবে কাজ করবে।
একদিন তার অল্প বয়সী ছেলে খেলার ছলে যন্ত্রটি হাতে নিয়ে সবার অজ্ঞাতে পাশের বাড়ির একজনের ফল বাগানে তাক করে ধরে রাখে। কিছুদিনের মধ্যেই ঐ লোকের ফলবাগানের ফলগুলো পঁচে গিয়ে ঝরে যেতে থাকে। লোকটি ছেলেটির এই কান্ডের কথা পরে জানতে পেরে বিষয়টা ধামাচাপা দেয়ার জন্য দুটো কাজ করে: (১) নির্ভরযোগ্য কিছু মানুষের মাধ্যমে প্রচার করতে শুরু করে, ঐ লোকের গাছের ফল পঁচে গেছে গাছের পাশে থাকা একটি নর্দমার দুর্গন্ধে। এই প্রচারণায় সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করে। কারণ সমাজের গ্রহণযোগ্য লোকদের পক্ষ থেকেই এমন মতামত আসতে শুরু করে। (২) লোকটি সুযোগ বুঝে ৩০০-৪০০ ফুট দূরের কিছু বাড়িতেও কয়েকজনের এমন কিছু ফল গাছে যন্ত্রটি তাক করে ধরে রাখে, যেগুলোর পাশে কোনো নর্দমা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সেসব বাড়ির ওই ফল গাছগুলোর ফলও পঁচে যেতে শুরু করে। মানুষ তখন স্বভাবতই ভাবতে থাকে, যে লোকের ফল গাছের ফল প্রথমে পঁচতে শুরু করেছে, সেই লোকের ফল গাছের পাশে যেভাবে নর্দমা থাকার কারণে তার ফল পঁচে গেছে, আমাদের ফলগাছের পাশেও নর্দমা থাকার কারণে আমাদের গাছের ফলগুলোও পঁচে যাচ্ছে।
ব্যস, লোকটির ছেলে ভুলক্রমে যে ক্ষতি করেছে, তা নিয়ে আর কেউ ভাবলো না। সবাই নর্দমার দোষ দিয়ে নর্দমা পরিষ্কারে মনোনিবেশ করলো।
এই ঘটনার সাথে চীনের ঘটনা মিলে যেতে পারে। তবে যেভাবে কোনো মানুষের জীবনের কোনো ঘটনা অন্য মানুষের জীবনের কোনো ঘটনার সাথে কখনো শতভাগ না মিলে গেলেও প্রধান কিছু অংশ মিলে যায়, এই ঘটনা তেমনি চীনের সাথে পুরোপুরি না মিললেও প্রধান কিছু অংশ মিলে যাবার সম্ভাবনা প্রবল।
(দুই) এক বনে ছিল এক চালাক শেয়াল। সে একদিন খাবারের খোঁজে লোকালয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সে মানুষের তৈরি একটি শেয়াল ধরার ফাঁদে পড়ে আটকে যায়। অনেক চেষ্টার পর সে ছাড়া পায়, তবে তার লেজটা কাটা পড়ে যায়। এরপর সে নিজের এলাকায় ফিরে আসে। ফিরে আসার পর সে ভাবতে থাকে, লেজ ছাড়া অন্য শেয়ালদের কাছে গেলে তারা তাকে লেজ হারানোর কথা জিজ্ঞেস করলে সে কী উত্তর দেবে! ফাঁদে আটকে লেজ হারানোর কথা বললে তার আত্মসম্মানে লাগবে। এজন্য সে ভাবতে থাকে কী করা যায়। শেষে তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। একদিন সে অন্য শেয়ালদের নিয়ে একটি সভা করে তাদেরকে বুঝাতে থাকে, 'আমাদের লেজের কোনো প্রয়োজন নেই। লেজ আমাদের জন্য একটা বোঝা, যা কোনো কাজে আসে না। লেজ কেটে ফেললে আমাদেরকে বরং সুন্দর দেখায়। এই দেখো, আমি নিজেই আমার লেজ কেটে ফেলেছি এসব ভেবে। লেজ কেটে অনেক ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে গেছি। তোমরাও তোমাদের লেজ কেটে ফেলতে পারো।' শেয়ালেরা তার কথা শুনে ভাবছিল কী করা উচিত। সভায় উপস্থিত এক প্রবীণ শেয়াল ধূর্ত শেয়ালটির চালাকি বুঝতে পারে। সে সবাইকে বলে, 'ধূর্ত শেয়াল নিজে হয়তো কোনো ফাঁদে পড়ে তার লেজ হারিয়ে ফেলেছে। এখন সবাইকে বলছে সবার লেজ কেটে ফেলতে, যেন সবাই ওর মতো লেজকাটা হয়ে যায়। তাহলে কেউ কাউকে নিন্দা করার সুযোগ পাবে না। তোমরা কেউ ওর ফাঁদে পা দেবে না।' এই কথা শোনার পর সবাই ধূর্ত শেয়ালের লেজ হারানো এবং তাদেরকে নিজের লেজ কেটে ফেলার পরামর্শের রহস্য বুঝতে পারে।
এই গল্পে শেয়াল দিয়ে মূলত সমাজের এক ধরনের চালাক মানুষকে বোঝানো হয়েছে। কারণ শেয়ালকে যতোই ধূর্ত বলে মনে করা হোক, শেয়াল এতো ধূর্ত প্রাণী নয়। মানুষ ছাড়া কোনো প্রাণী মানুষের মতো ধূর্ত হতে পারে কিনা, জানা নেই। মানুষের চেয়ে ক্ষীপ্র, হিংস্র হতে পারে, কিন্তু হয়তো চালাক বা ধূর্ত হতে পারে না। শেয়ালের এই কাল্পনিক গল্পের সাথে করোনাভাইারাসের বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাবের মিল বা সম্পর্ক নেই, এই দীর্ঘ নিবন্ধ পড়ার পর তা ভাবা খুবই কষ্টকর হতে পারে।
তবে এই দু'গল্পের চেয়ে একটু ভিন্নও হতে পারে চীনের উহান থেকে উৎসারিত করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাবের গল্প। সেক্ষেত্রে প্রথম গল্পটি এরকম হতে পারে:
লোকটি যন্ত্রটি তৈরি করেছিল এই উদ্দেশ্যে, যেন বাজারে শুধু তার গাছের ফলই বিক্রি হয়, অন্য কেউ বা তার প্রতিদ্বন্দীরা যেন বাজারে ফল বিক্রি দূরের কথা, ফল উৎপাদনই করতে না পারে। সেজন্য সে যন্ত্রটি তৈরি করার পর আগে নিজের এক গাছে প্রয়োগ করে দেখলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা! যখন দেখলো, কাজ ঠিকমতো করছে, তখন সে তার কিছু প্রতিদ্বন্দীর গাছেও প্রয়োগ করলো তাদের অজান্তে। পরে সমাজের কিছু গ্রহণযোগ্য লোক তার পক্ষে প্রচার করতে লাগলো, লোকটির গাছের নিকট একটি নর্দমা থাকার কারণে তার একটি গাছের ফল নষ্ট হয়ে গেছে। সেই গাছ থেকে কীটপতঙ্গ অন্য মানুষের গাছেও রোগটি ছড়িয়ে দিয়েছে। (লোকটি এসবের কিছু জানে না।)
করোনাভাইরাস নিয়ে এই দীর্ঘ নিবন্ধের এই পর্যায়ে এসে এই তিন গল্পের কোনো একটিকে সঠিক বলে অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছাই যায়। তবে শতভাগ না মিললেও কাছ ঘেঁষে চলে যাবে।
তবে যেহেতু বিষয়টা শুধুই অনুমান, তাই চীন ছাড়া অন্য দেশে ছড়ানোর পেছনে ভিন্ন দুষ্কৃতিকারীর হাত থাকার বিষয়টাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ, (১) কিছু মানুষ আছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে অভ্যস্ত। সত্য একদিন প্রকাশ পেতেই পারে। (২) অদৃশ্য বিষ নিয়ে শুধু উহানেই গবেষণা হয় না, আরো অনেক দেশেই হয়।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ মে পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪০০০ এর চেয়ে বেশি, এমন দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি দেশে উহানের মতো অদৃশ্য বিষ ছড়িয়ে দেয়ার সম্ভাব্যতা উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। এই সম্ভাব্যতার পেছনে অন্তত ৪টি ভিত্তি থাকার কথা একটু আগে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, অবশিষ্ট দেশগুলোতে যদি অদৃশ্য বিষ ছড়িয়ে দেয়া না হয়, তবু সেগুলোতে করোনাভাইরাসে চার-পাঁচ হাজারের বেশি মৃত্যু না হলেও এতো বেশি মৃত্যুর কারণ কী?
সম্ভাব্য কিছু কারণ:
(এক) কিছু লোক 'প্রকৃত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত' কোনো দেশ থেকে আক্রান্ত হয়ে এসব দেশে এসে মৃত্যুবরণ করেছে। (দুই) পরীক্ষার ভুলে অনেক মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের শরীরে আগে থেকেই অন্য রোগ থাকার কারণে সেসব রোগের তীব্রতায় তারা মারা গেছে, করোনাভাইরাসে নয়। (তিন) পরীক্ষার ভুলে যারা করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, তাদের অনেকে সংশ্লিষ্ট দেশে চিকিৎসার অভাবে বা চিকিৎসা ব্যবস্থায় সাময়িক স্থবিরতা বা সীমাবদ্ধতার কারণে মারা গেছে। যেমন ফিলিপাইনে এবং ফিলিপাইনের মতো অনেক দেশে করোনার উপদ্রবের পর অনেক চিকিৎসক নিজেই চলে গেছেন কোয়ারেন্টাইনে। ফলে চিকিৎসাব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে সাময়িক সংকট। অনেক হাসপাতালও বন্ধ হয়ে গেছে। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে রোগীরা আইসোলেশনে থেকে থেকে মারা গেছে। (চার) পরীক্ষার ভুলে যারা করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, সত্যিই করোনাভাইরাস মনে করে করোনাভাইরাসের রোগীর মতোই তাদের চিকিৎসা করার কারণে অনেকে মারা গেছে। এটা সবাই জানে, করোনাভাইরাসে এন্টিবায়োটিক অকার্যকর। 'করোনাভাইরাস: কোথা থেকে এসেছে, কিভাবে ছড়ায়, কতটা ভয়ংকর, চিকিৎসা কী?' শিরোনামে বিবিসি বাংলায় ২৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো নেই, এবং এমন কোন চিকিৎসা নেই যা এ রোগ ঠেকাতে পারে।' [https://www.bbc.com/bengali/news-51206037]
''What Is Coronavirus?' শিরোনামে হপকিন্স মেডিসিনের ওয়েবসাইটে ১৯ মে ২০২০ তারিখে সর্বশেষ আপডেটকৃত একটি নিবন্ধে (Reviewed By: Lauren M. Sauer, M.S.) উল্লেখ করা হয়,
'How is COVID-19 treated?
As of now, there is not a specific treatment for the virus. People who become sick from COVID-19 should be treated with supportive measures: those that relieve symptoms. For severe cases, there may be additional options for treatment, including research drugs and therapeutics.' [https://www.hopkinsmedicine.org/health/conditions-and-diseases/coronavirus]
Australian Government Department of health - এর ওয়েবসাইটে 'Coronavirus (COVID-19)' শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, 'There is no treatment for coronavirus, but medical care can treat most of the symptoms. Antibiotics do not work on viruses. If you have been diagnosed with coronavirus, isolate yourself in your home.' [https://www.health.gov.au/health-topics/novel-coronavirus-2019-ncov]
চিকিৎসাহীনভাবে সেল্ফ আইসোলেশনে থেকে অনেকে মারা গিয়ে থাকতে পারে। (পাঁচ) সর্দি-কাশি বা ঠান্ডাজনিত রোগ, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়ায় এমনিতেই বিশ্বের সব দেশে সব সময় অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করে। যেসব দেশের কথা এখন বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক মাসে সেসব দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব না হলেও যেসব লোক এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে মনে করা হচ্ছে, তাদের অনেকে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ায় মারা যেতো। কিন্তু তাদের ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়াটা পরীক্ষার ভুলে করোনাভাইরাস বলে পরিগণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুকে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
যেসব দেশে উহানের মতো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, সেসব দেশের তালিকা এমন হতে পারে: ইরান, ইতালি, জার্মানী, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন এবং ব্রাজিল।
এছাড়া ৪০০০ এর বেশি মৃত্যুবরণ করেছে, এমন বাকি দেশগুলোতে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা, সন্দেহ আছে। আক্রান্ত অনেক বেশি, কিন্তু মৃত্যু অনেক কম, এরকম দেশ আছে রাশিয়া এবং ভারত। এসব দেশে বেশি পরীক্ষা করার কারণে বেশি শনাক্ত হচ্ছে। এই কথাটা প্রমাণিত হবে তখন, এসব দেশ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব নিঃশেষ হয়ে যাবার বছর খানেক পর আবার এরকম ব্যাপক হারে করোনা টেষ্ট করে, বিশেষ করে সর্দি, কাশি, হাঁচি এরকম উপসর্গ বিশিষ্ট বা নিউমোনিয়া/ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত মানুষদের করোনা টেস্ট করে যখন দেখা যাবে এখনকার মতো তখনো অনেক অনেক মানুষের করোনা পজিটিভ হচ্ছে।
একটি প্রতিবেদন দেখা যাক:
'আইসল্যান্ডের গবেষণা : ভয়ঙ্কর তথ্য, অর্ধেকের বেশি মানুষ কোনো লক্ষণ ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত!' শিরোনামে কালের কন্ঠে ২৬ মার্চ ২০২০তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে করোনা পরিস্থিতি। মহামারিটি এরই মধ্যে বিশ্বের ১৯৮ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ জন। মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ৩৬৭ জনের। মারাত্মক প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে রুখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গৃহবন্দি হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ। এরই মধ্যে ৩৮০ বারেরও অধিকবার জিনের বদল ঘটিয়ে ভাইরাসটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। একে কিভাবে রুখা যাবে সেটা খুঁজতেই গলদঘর্ম বিশ্বের তাবৎ বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা।
তবে সংক্রামক এই রোগের উৎস সম্পর্কে জানতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন আইসল্যান্ডের গবেষকরা। ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটিতে জনসংখ্যা মাত্র ৩ লাখ ৬৪ হাজার। সে জন্য সরকার সেখানে কোনো লকডাউন বা কারফিউ চাপিয়ে না দিয়ে দেশের সব জনগণের করোনা টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানেই দেখা গেছে অবাক করা সেই তথ্য।
রবিবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ এবং বায়োটেকনোলজি ফার্ম ডিকোড জেনেটিক্স ১০ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে পরীক্ষা করেছেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার মানুষের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে জনসংখ্যার অনুপাতে মাথাপিছু পরীক্ষার তুলনায় আইসল্যান্ডের এই সংখ্যা অনেক বেশি। এটাই মাথাপিছু হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় করোনা পরীক্ষা বলে দাবি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
তবে আইসল্যান্ডের পরীক্ষা অন্যান্য দেশের মতো নয়। অন্যদেশে লোকদের মাঝে করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই কেবল পরীক্ষা করা হয়। অথবা কোন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসলে পরীক্ষা করা হয়। আইসল্যান্ড একমাত্র দেশ যারা করোনার কোন লক্ষণ না থাকলেও বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করেছে। এমনকি এসব লোকেরা কোন করোনায় আক্রান্তের সংস্পর্শেও আসেননি। এমনকি পর্যায়ক্রমে দেশের সব মানুষকে করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গবেষণায় আইসল্যান্ডে ২১৮ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় যে ২১৮ জন করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে তাদের অর্ধেকের মাঝে করোনা ভাইরাসজনিত কোনো লক্ষণ ছিল না। এই তথ্য করোনাভাইরাস গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার নতুন ধারা সুচিত করেছে। এই ঘটনা এটাই প্রমাণ করেছে যে, ভাইরাসজনিত লক্ষণ নেই এমন লোকদের মধ্যেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এমনকি যাদের মাঝে অসুস্থতার বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই তাদের মাঝেও সুপ্ত অবস্থায় ছড়িয়েছে মারণ এই ভাইরাস।
অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানতে পেরেছেন যে, ১০ শতাংশেরও বেশি রোগী ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত এমন ব্যক্তির দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন তবে এখনও তাদের মাঝে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়নি।
আইসল্যান্ডের চিফ এপিডেমিওলজিস্ট থোরলফার গনসন বাজফিড নিউজকে বলেছেন, 'ডিকোড জেনেটিক্সের প্রাথমিক ফলাফলগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, সাধারণ জনসংখ্যার কম সংখ্যক ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছে এবং যারা পজেটিভ হয়েছেন তাদের প্রায় অর্ধেকই লক্ষণহীন। বাকি অর্ধেক মানুষের মাঝে মাঝারি শীত-জাতীয় লক্ষণ দেখা যায়।'
আইসল্যান্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, তারা বিশ্বের অন্য কোথাও যেখানে উচ্চ জনসংখ্যার হার রয়েছে সেখানে সাধারণ নাগরিকদের মাঝে একই ধরণের পরীক্ষা চালাবেন। সিদ্ধান্তে আসার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গনসন বলেছিলেন, আইসল্যান্ডের স্বল্প জনসংখ্যা দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ ও চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ডিকোড জেনেটিক্সের এমন বৃহত্তর পরীক্ষার জন্য দারুন ভুমিকা রেখেছে। এখন গবেষকরা এটা বৃহত্তর স্কেলে টেস্টিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই তথ্য ভবিষ্যতে ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য একটি মূল্যবান উপাত্ত হবে।'
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড ওমিটারের দেওয়া তথ্য মতে, আইসল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ৭৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দুই জনের।' সূত্র- আল-আরাবিয়া। [https://www.kalerkantho.com/online/world/2020/03/26/890963]
এখানে বলা হয়েছে, 'আইসল্যান্ডের পরীক্ষা অন্যান্য দেশের মতো নয়। অন্যদেশে লোকদের মাঝে করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই কেবল পরীক্ষা করা হয়। অথবা কোন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসলে পরীক্ষা করা হয়। আইসল্যান্ড একমাত্র দেশ যারা করোনার কোন লক্ষণ না থাকলেও বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করেছে। এমনকি এসব লোকেরা কোন করোনায় আক্রান্তের সংস্পর্শেও আসেননি। এমনকি পর্যায়ক্রমে দেশের সব মানুষকে করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।'
আইসল্যান্ডে যদি 'করোনার কোনো লক্ষণ নেই এবং করোনায় আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে যায়নি, এমন লোক'দের পরীক্ষা না করে শুধু যাদের শরীরে করোনার লক্ষণ আছে, তাদের পরীক্ষা করা হতো, তাহলে পরীক্ষাকৃত লোকের তুলনায় করোনা পজিটিভ রোগীর হার অনেক বেশি হতো। যেখানে করোনার কোনো লক্ষণ নেই, এমনকি কোনো করোনায় আক্রান্তের সংস্পর্শেও আসেননি, এমন লোকদের করোনা পরীক্ষা করেও অনেক মানুষের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে, সেখানে করোনার লক্ষণ আছে, শুধু এমন লোকদের করোনা পরীক্ষা করলে করোনা পজিটিভ রোগীর হার নিশ্চিতভাবে আরো বেশি হতো। এর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা এসব রোগ নির্ণয় করা হয় যে পদ্ধতিতে, সেই 'আরটি পিসিআর' পদ্ধতিতেই করোনা পরীক্ষা করার ফলে নিউমোনিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত অনেকে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হতেই পারে। উপরে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সহজ কথায় পরীক্ষা পদ্ধতির ত্রুটির কারণে অনেক দেশে অসংখ্য মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যারা সত্যিকারার্থে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না। এরা অনেক অবহেলায় বা চিকিৎসার অভাবে বা হতাশায় ভুগে বা অ্যন্টিবায়োটিক ছাড়া চিকিৎসা করানোর ফলে বা শরীরে আগ থেকে বিদ্যমান অন্য রোগের (যেমন: ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, যক্ষা ইত্যাদি) তীব্রতায় বা মারা গেছে। দোষ হয়েছে শেষে ঐ করোনারাই। তাছাড়া স্বয়ং নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জায়ও অনেকে মারা যায়, দুর্নাম হয় করোনাভাইরাসের। কারণ তাদের নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। আর বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বছরের সব সময় নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগে অনেক মানুষ মারা যায়।