করোনাভাইরাসের প্রকৃত রহস্য
[করোনাভাইরাস : কোত্থেকে ছড়ালো? সত্যিই কি ছোঁয়াচে? সত্যিই কি কোনো ‘ভাইরাস’? মহামারী প্রতিরোধে করণীয়]
এবার বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাক, রোগগুলো আসলেই ছোঁয়াচে কিনা?
ধরুন, আপনি সর্দি-জ্বর জাতীয় শারীরিক সমস্যা, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়া, এরকম কোনো একটায় ভুগছেন। এ অবস্থায় একদিন আপনি কোনো এক সামাজিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন ঐ বৈঠকের মধ্যমণি হিসেবে, যেখানে ২০ জনের মতো লোক ছিল, যাদের কারো আপনার মতো সমস্যা ছিল না, সবাই পুরো সুস্থ ছিলেন। তারা সবাই আপনার কাছাকাছিই বসেছিল।
বৈঠকটি চলমান ছিল ২ ঘন্টার মতো। শুধু তা-ই নয়, বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসংখ্যবার আপনার হাঁচি এবং কাশি এসেছে; আপনার নাক দিয়ে শ্লেষ্মাও নির্গত হয়েছে অনেক। কিন্তু আপনি মাস্ক ব্যবহার করেননি, কোনো টিস্যু বা রুমালও ব্যবহার করার সুযোগ পাননি, শুধু হাত ব্যবহার করেছেন জরুরী ক্ষেত্রে।
আপনার কি মনে হয়, আপনার ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়া উক্ত বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সবার মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে? সবার মধ্যে না হলেও অন্তত একজনের মধ্যেও কি আপনার শারীরিক সমস্যাটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে? আপনার জীবনে কি এরকম ঘটনা কখনো ঘটেছে, আপনি একজনের সামনে হাঁচি বা কাশি দিলেন, তাতে ঐ লোকও আপনার হাঁচি-কাশিজনিত শারীরিক সমস্যায় (যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়া) আক্রান্ত হয়ে গেলো?
এরকম কোনো ঘটনা ঘটলে একজনের সর্দি-কাশি বা সর্দি-কাশিজনিত সমস্যা কি আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে?
অথবা ধরুন, আপনি এবং আরো ১৯ জন মিলে মোট ২০ জন লোক কোনো এক জায়গায় গিয়েছেন এক ঘন্টা সময় ধরে হেঁটে হেঁটে। আপনাদের মধ্যে শুধু একজন নিউমোনিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভোগার কারণে বার বার হাঁচি এবং কাশি দিচ্ছিল। টিস্যু রুমালও ব্যবহার করছিল না, মাস্ক ব্যবহার করা দূরের কথা।
ওই লোকের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে আপনারাও কি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যাবেন? সবাই না হলেও অন্তত একজনও কি ওই লোক থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজলে অনেকের চোখ খুলে যাবে এই রোগগুলোর সম্পর্কে একটা বদ্ধমূল ধারণার অসারতার ব্যাপারে।
Centers for Disease Control and Prevention (CDC) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে 'How COVID-19 Spreads' শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, 'COVID-19 is a new disease and we are still learning how it spreads, the severity of illness it causes, and to what extent it may spread in the United States.
Person-to-person spread
The virus is thought to spread mainly from person-to-person.
Between people who are in close contact with one another (within about 6 feet).
Through respiratory droplets produced when an infected person coughs or sneezes.
These droplets can land in the mouths or noses of people who are nearby or possibly be inhaled into the lungs.' [https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/about/transmission.html]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে Coronavirus শিরোনামে প্রকাশিত (নিয়মিত হালনাগাদকৃত) নিবন্ধে বলা হয়, 'Standard recommendations to prevent infection spread include regular hand washing, covering mouth and nose when coughing and sneezing, thoroughly cooking meat and eggs. Avoid close contact with anyone showing symptoms of respiratory illness such as coughing and sneezing.' [https://www.who.int/health-topics/coronavirus]
কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার ওয়েবসাইটে 'How does coronavirus spread and how can you protect yourself?' শিরোনামে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে বলা হয়,
'How is the coronavirus spreading?
The coronavirus - known as COVID-19 - spreads from person to person in close proximity, similar to other respiratory illnesses, such as the flu.
Droplets of bodily fluids - such as saliva or mucus - from an infected person are dispersed in the air or on surfaces by coughing or sneezing.
These droplets can come into direct contact with other people or can infect those who pick them up by touching infected surfaces and then their face.
According to scientists, coughs and sneezes can travel several feet and stay suspended in the air for up to 10 minutes.' [https://www.aljazeera.com/news/2020/01/coronavirus-spread-protect-200130115539072.html]
সিএনবিসি'র ওয়েবসাইটে 'Coronavirus: What are the symptoms, how it spreads and how to protect yourself' শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেন Noah Higgins-Dunn, যা প্রকাশিত হয় ৪ মার্চ ২০২০ তারিখে। সেখানে বলা হয়, 'The coronavirus’ spread is similar to the flu, according to World Health Organization. Whenever someone with the virus coughs or exhales, they release droplets of infected fluid that can land on nearby surfaces and can infect another person who comes in contact.' [https://www.cnbc.com/2020/03/04/coronavirus-what-are-the-symptoms-and-how-to-protect-yourself.html]
এই চারটি নিবন্ধ-প্রতিবেদনের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কিত প্রায় সব নিবন্ধ-প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসকে নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো একটি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ হিসেবেই প্রচার করা হয়। বলা হয়, বিজ্ঞানীদের মতে, ভাইরাসটি মূলত একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে (প্রায় ৬ ফুটের মধ্যে) ছড়িয়ে পড়ে; বলা হয়, সংক্রমিত ব্যক্তির লালা, শ্লেষ্মা ইত্যাদি তরলের ফোঁটা কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এমনকি ১০ মিনিট পর্যন্ত বাতাসে স্থির থাকতে পারে; বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধের আদর্শ সুপারিশগুলির মধ্যে নিয়মিত হাত ধোয়া, কাশি এবং হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক ঢেকে রাখা, মাংস এবং ডিম ভালোভাবে রান্না করা অন্তর্ভুক্ত। কাশি এবং হাঁচি দেওয়ার মতো শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার লক্ষণগুলো দেখানো কারও সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলতেও বলা হয়।
প্রথম অধ্যায়েও আমরা বুঝার চেষ্টা করেছি, নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা এগুলো ছোঁয়াচে নয়, এই প্রতিবেদনগুলো উল্লেখ করার আগেও প্রসঙ্গক্রমে আবারও 'নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা এগুলো ছোঁয়াচে নয়' এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যদি নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা এগুলো বাস্তবে ছোঁয়াচে না হয়, এগুলো সম্পর্কে পূর্বধারণা (ছোঁয়াচে হওয়া) ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে করোনাভাইরাসের উপর থেকেও ছোঁয়াচে অপবাদের লেবেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে খসে পড়বে।
যেহেতু করোনাভাইরাস একটি ফুসফুসের সংক্রমণজনিত রোগ হবার কারণে একে নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ মনে করা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে 'নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়' যখন প্রমাণিত হলো, তখন করোনাভাইরাস আর ছোঁয়াচে থাকে কিভাবে?!
সর্বশেষ প্রতিবেদনগুলো আমাদেরকে এই বিষয়টাও নিশ্চিত করে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কারো সর্বোচ্চ ৬ ফুট (অবশ্য শুধু ৩ বা ৬ নয়, ২৭ ফুট দূর থেকেও করোনাভাইরাসে যে-কেউ সংক্রমিত হতে পারে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সহযোগী অধ্যাপক লিডিয়া বুরিবা। খবর নিউইয়র্ক পোস্ট ও ইউএসএ টুডে'র। নিউইয়র্ক পোস্টে ৩১ মার্চ ২০২০ তারিখে 'Coronavirus could travel 27 feet, stay in air for hours: MIT researcher' শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে (By Lee Brown) বলা হয়, 'Social-distancing guidelines to stay 6 feet from others may be woefully inadequate, one scientist warns — saying the coronavirus can travel 27 feet and linger for hours.
MIT associate professor Lydia Bourouiba, who has researched the dynamics of coughs and sneezes for years, warns in newly published research that the current guidelines are based on outdated models from the 1930s.
Rather than the assumed safety of 6 feet, Bourouiba warns that ''pathogen-bearing droplets of all sizes can travel 23 to 27 feet.'' [https://nypost.com/2020/03/31/coronavirus-could-travel-27-feet-stay-in-air-for-hours-mit-researcher/]) কাছে যারা কখনো যায়নি, তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার কথা নয়। এটা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি, বিশ্বের নানা প্রান্তের যাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে, যারা করোনায় আক্রান্ত কারো শুধু ৬ ফুট বা ২৭ ফুট নয়, বরং ২৭ মাইল কাছেও একটিবারের জন্যও যায়নি, চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রবের পর থেকে চীনে যায়নি, তবু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়াটা গুজব হবার সম্ভাবনাই বেশি, যদি গুজব না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে (১) চীনে 'একেবারে প্রথমে' করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকগুলো যে কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, সেরকম কোনো কারণ কাজ করেছে চীনের পরবর্তী মানুষ এবং বিশ্বের নানা প্রান্তের যেসব মানুষ চীনের সাথে কোনো যোগসূত্র ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পেছনেও; অথবা (২) করোনাভাইরাস শনাক্ত করার জন্য যে পরীক্ষা করা হয়, সে পরীক্ষার ত্রুটির কারণেই তারা করোনা নেগেটিভ রোগী হয়েও পজিটিভ হয়ে গেছে।
পরবর্র্তী আলোচনাগুলো করা হবে এই দু'টি বিষয় পরিষ্কারভাবে জানার জন্যই।
চীনে 'একেবারে প্রথমে' করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকগুলো ঠিক কী কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা না করে আগে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা যাক। দেখা যাক, সেখানে সত্যিই কোনো ত্রুটি আছে কিনা!
করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে আমরা বুঝতে পারবো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়, তবু বিশ্বের অনেক দেশের অনেক মানুষ পরীক্ষায় 'করোনাভাইরাসে পজিটিভ' হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।
.....................................................................
[প্রথম পর্ব থেকে পড়তে হলে যেতে হবে এই লিঙ্কে: https://www.facebook.com/nurahmad.bangladeshi/posts/149460373326356?__tn__=K-R-R-R-R-R-R
বইটি প্রকাশিত হয়েছে ১১ জুন। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪১৬। চাহিদা জানালে কুরিয়ারে/ডাকযোগে পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে ইনবক্সে যোগাযোগ করতে হবে : https://www.facebook.com/nurahmad.teacher
নিবন্ধ/বইটি গভীরভাবে মনোযোগসহ পুরো পড়ে থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাবেন অবশ্যই। জানাতে পারেন, বইটি পড়ে আপনার কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি উপকারে এসেছে বা ভালো লেগেছে। জানাতে পারেন বইটি সম্পর্কে আপনার অনুভূতি, অভিমত। এই পেইজে গিয়েও মতামত জানাতে পারেন: https://www.facebook.com/nurahmad.bangladeshi/posts/149460373326356?__tn__=K-R]
বইটি প্রকাশিত হয়েছে ১১ জুন। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪১৬। চাহিদা জানালে কুরিয়ারে/ডাকযোগে পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে ইনবক্সে যোগাযোগ করতে হবে : https://www.facebook.com/nurahmad.teacher
নিবন্ধ/বইটি গভীরভাবে মনোযোগসহ পুরো পড়ে থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাবেন অবশ্যই। জানাতে পারেন, বইটি পড়ে আপনার কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি উপকারে এসেছে বা ভালো লেগেছে। জানাতে পারেন বইটি সম্পর্কে আপনার অনুভূতি, অভিমত। এই পেইজে গিয়েও মতামত জানাতে পারেন: https://www.facebook.com/nurahmad.bangladeshi/posts/149460373326356?__tn__=K-R]
** মতামত জানাতে পারেন নিচের ফেসবুক কমেন্ট বক্সেও। আপনার মতামত আমাদের নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।